শীত চলে যাচ্ছে, আসছে বসন্ত। এ সময় পরিবেশে প্রচুর ধুলাবালু। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে, যার ফলে বায়ুদূষণ বেড়ে যায়। এ সময় তাই অনেকেরই ডাস্ট অ্যালার্জি বাড়ে।
আমাদের শরীর যখন কোনো কিছুর প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়, তখন অ্যালার্জির সৃষ্টি হয়। ডাস্ট অ্যালার্জি কেবল ধুলার কারণেই নয়, ঘরের ভেতর ও আশপাশে থাকা কিছু জিনিসের কারণেও হতে পারে। এতে শরীরে চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ি বের হয়। এমনকি বমিও হতে পারে।
যাঁদের ধুলায় অ্যালার্জি আছে, তাঁদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা উচিত নয়। যদি নাকে ধুলাবালু ঢোকে, তবে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত চলতে শুরু করে এবং নাক-চোখ থেকে পানি আসতে শুরু করে। হালকা ধোঁয়ায়ও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, কাশি শুরু হয়।
কারণ
ডাস্ট অ্যালার্জির বড় কারণ হলো মাইট, যাকে ডাস্ট মাইট বলে। এ কণাগুলোয় অণুজীব রয়েছে, যা খালি চোখে দেখা যায় না।
অন্য যে কারণ ধুলায় অ্যালার্জি সৃষ্টি করে, তা হলো তেলাপোকার দ্বারা নির্গত ক্ষতিকর অ্যালার্জেন। এ কণাগুলো শ্বাস নেওয়ার সময় শ্বাসতন্ত্রে ঢোকে এবং অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
ছাঁচ হলো পরিবেশে উপস্থিত একধরনের ছত্রাক। এটিও অ্যালার্জির একটি কারণ।
কুকুর, বিড়াল বা পোষা প্রাণীর চুল ও খুশকিতে ডাস্ট অ্যালার্জি হয়। ফুলের পরাগরেণু নাক ও গলায় ঢুকেও অ্যালার্জি হতে পারে। ফুলের গন্ধ নিলেও অনেকের অ্যালার্জি হয়।
হাঁচি, সর্দি, নাক বন্ধ, ক্লান্তি, দুর্বলতা, চোখ ফুলে যাওয়া, কাশি, চোখ, নাক, গলায় চুলকানি, লাল চোখ, চোখের নিচে কালো দাগ, হাঁপানির মতো লক্ষণ, কান বন্ধ, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, চামড়ার ওপর ফুসকুড়ি ওঠা ইত্যাদি নানাভাবে ডাস্ট অ্যালার্জি প্রকাশ পেতে পারে।
করণীয়
যাঁদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তাঁদের ওপরে উল্লেখিত অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকতে হবে।
এক গ্লাস গরম পানিতে দুই চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ও সামান্য মধু মিশিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দুবার খাওয়া যেতে পারে।
দুই টেবিল চামচ খাঁটি মধু এক কাপ পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দুবার খেতে পারেন।
ডাস্ট অ্যালার্জির কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
চুলকানি, অনবরত হাঁচি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা চোখ থেকে পানি ঝরতে থাকলে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শে খাওয়া যেতে পারে।
অতিরিক্ত উদ্বেগ পরিহার করুন, চোখ বন্ধ করে একটু বিশ্রাম নিন।
স্টেরয়েড জাতীয় নাকের স্প্রে ব্যবহার করে নাকের ভেতরের ফোলাভাব কমানো যায়। নাক বন্ধ হয়ে থাকলে স্যালাইন সলিউশন দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে হবে।
অ্যালার্জি হয়, এমন খাবার না খাওয়াই ভালো।
হঠাৎ ত্বকের কোথাও লাল হয়ে গেলে, চুলকানি হলে ঠান্ডা পানির সেঁক দিলে বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে আরাম পাওয়া যায়।
সমস্যা না কমলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।