চর্ম, যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক নারীই অ্যালার্জি বা ত্বকের সমস্যায় ভোগেন। এ সময় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া বা ব্যবহার করা যাবে না। আগে জেনে নিই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ত্বকে কোন ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
বেশির ভাগ নারীর পায়ে এবং কারও কারও কপালে ও গালে কালো কালো ছোপ হয়। নাভির নিচের স্থানও কালো ছোপ হতে পারে। ধারণা করা হয়, ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিবর্তনের জন্য এ রোগ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০-৮০ শতাংশ নারী গর্ভধারণের সময় এতে আক্রান্ত হন।
আরেকটি সমস্যা স্ট্রায়া গ্র্যাভিডেরাম। পেট বড় হওয়ার কারণে পেটের চামড়ায় ধীরে ধীরে টান পড়লে ফাটা দাগ পড়ে। নাভির নিচের অংশের সঙ্গে সঙ্গে স্তন আক্রান্ত হতে পারে।
তবে সবচেয়ে বিরক্তিকর সমস্যা চুলকানি। এ সময় অনেক নারীর প্রচণ্ড চুলকানি দেখা দেয়। কিছুটা উপশম করা গেলেও সন্তান প্রসবের আগে এটি ভালো হতে চায় না। তবে বিলিয়ারি সিরোসিস, ভাইরাল হেপাটাইটিস, হেপাটিক ফেইলিওরের মতো কিছু রোগের কারণেও চুলকানি হতে পারে। যে নারীরা রক্তাল্পতায় ভোগেন, তাঁরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন।
পেমফিগয়েড জেসটেশনিস নামের রোগটি অন্তঃসত্ত্বা নারীর দ্বিতীয় বা তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে (তিন মাসকাল) দেখা দিতে পারে। ২৫ শতাংশ নারী এ রোগে আক্রান্ত হন। আবার অনেকের প্রসবের পর এ রোগ হয়। এ রোগে সাধারণত নাভির তলদেশ, থাই, স্তনের অংশে ছোট ছোট জলফোসকা (আর্টিকেরিয়াল প্যাপিউলস) হয়।
যাঁদের গর্ভে একাধিক সন্তান থাকে, সাধারণত তাঁদের প্রুরাইটিক আর্টিকেরিয়াল প্যাপিউলস হতে দেখা যায়। সন্তানধারণের ৩৬ থেকে ৩৯ সপ্তাহের মধ্যে এ রোগের সূত্রপাত হয়। এ সময় চুলকানি ও র্যাশ হতে পারে। মূলত তলপেট থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে রোগটি গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কারও কারও শরীরে জলফোসকাও হয়।
প্রুরাইটাস গ্র্যাভিডেরাম হয় দ্বিতীয় বা তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে। এতে নাভির নিচে ও পায়ের চামড়া আক্রান্ত হয়। অনেক সময় হাতের তালুতেও হয়। এ রোগ থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ রোগে রক্তে সেরাম অ্যালকালাইন ফসফেটেজ ও বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়।
এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ত্বকে ছোট ছোট ব্রণের মতো ফুসকুড়ি হতে পারে।
চিকিৎসা
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। ব্রণের সমস্যায় রেটিনয়েডস–জাতীয় ওষুধ নিলে গর্ভের শিশুর ক্ষতির ঝুঁকি আছে। টেট্রাসাইক্লিন ও অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন নিলেও অনেক সময় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া টপিক্যাল স্টেরয়েড ব্যবহার করা চলবে না।
ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক,