প্রতিদিন একটি শসা খেলেই এত উপকার
শসা বছরজুড়েই পাওয়া যায়। এতে ৯৫ শতাংশ পানি থাকে, যা শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে, শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। তাই শীত কিংবা গ্রীষ্ম, সব সময়ই শসা খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।
প্রতি ১০০ গ্রাম শসা থেকে ১৫.৫ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়। প্রোটিন পাওয়া যায় ০.৬৪ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.৭৮ গ্রাম, ফ্যাট ০.১১ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ০.৬২ গ্রাম, মনোসাক্যারাইড ১.৭০ গ্রাম।
এসব উপাদান ছাড়াও দেহের জন্য শসায় আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
১. দেহে আর্দ্রতা বজায় রেখে পানিশূন্যতা রোধ করে
শসার ৯৫ শতাংশই পানি। এই পানি শরীর আর্দ্র ও পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বিশেষত শীতকালে পানি কম খাওয়া হলেও শসা খেলে উপকার পাবেন।
২. ওজন কমাতে সাহায্য করে
শসায় উচ্চমাত্রার পানি ও নিম্নমাত্রার ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে। ওজন কমাতে শসা টনিকের মতো কাজ করে।
৩. হজমে সাহায্য করে
শসাতে থাকা ভিটামিন, আঁশ ও পানি হজমে সাহায্য করে। প্রতিদিন শসা খেলে পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে। দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা।
৪. ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে
শসায় উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সিলিকন আছে, যা ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। মলিনতা ও শুষ্কতা দূর করে ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন বি, নায়াসিন, রিবোফ্লোবিন, ভিটামিন সি এবং জিংক ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৫. হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতা
শসাতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন কে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত জমাট বাঁধা এবং রক্ত প্রবাহের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদ্যন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে।
৬. চোখের জ্যোতি বাড়ায়
চোখের প্রদাহ প্রতিরোধের উপাদান প্রচুর পরিমাণ থাকায় ছানি পড়া ঠেকাতে কাজ করে। এ ছাড়া চোখের পাতায় ব্যবহার করলে ময়লা অপসারণ করতে ও জ্যোতি বাড়াতে কাজ করে।
৭. হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা
শসাতে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী ফসফরাস পাওয়া যায়।
৮. চুল ও নখের উন্নতি
শসার মধ্যে যে খনিজ সিলিকা থাকে, তা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে। শসার সালফার ও সিলিকন চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৯. ইউরিক অ্যাসিড কমায়
প্রচুর পরিমাণ সিলিকা থাকায় শরীরে জমে থাকা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। এতে বাতের ব্যথা কমে। বিশেষত গেঁটে বাতের রোগীরা উপকার পান।
১০. মাথাব্যথা কমায়
শসাতে প্রচুর ভিটামিন বি থাকার কারণে ঘুম ভালো হয়, মাথা ধরা কম হয়।
১১. মানসিক চাপ কমায়
শসার ভিটামিন বি ১, বি ৫ এবং বি ৭ উদ্বেগ ও চাপ কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত ভারী খাবার খাওয়ার সময় বা পরে শসা খাওয়া হয়। খালি পেটে শসা না খাওয়াই ভালো। রাতে শসা খেলে অনেকের সমস্যা হয়, তাই দিনের বেলা শসা খাওয়ার সঠিক সময়। তাই সকালে বা দুপুরে খেলে ভালো।
আবার অতিরিক্ত শসা খেলে বদহজম বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। প্রতিদিন মেনুতে শসা রাখুন, তবে ১ থেকে ২টির বেশি নয়।
সাজিয়া মাহমুদ, কনসালট্যান্ট পুষ্টিবিদ, প্যানকেয়ার হাসপাতাল