শীতে চোখ শুষ্ক হওয়ার সমস্যা দূর করতে কী করব

শীত মৌসুমে হিমেল বাতাসের সংস্পর্শে চোখে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারেছবি: পেক্সেলস

শীত মৌসুমে হিমেল বাতাসের সংস্পর্শে চোখে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন চোখে জ্বালা, ফুলে লাল হয়ে যাওয়া, অনবরত পানি ঝরা বা শুষ্ক হয়ে যাওয়া। ঠান্ডায় কনজাঙ্কটিভাইটিসের সমস্যাও ভোগায়। চোখ কড়কড় করে, পানি পড়ে। তাই এ সময়ে চোখের একটু বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। 

শীতে কেন সমস্যা 

শীতে বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বাড়ে, ধুলাবালু বাতাসে ভাসে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ক্ষতিকর ছত্রাকের প্রকোপ বাড়ে। সংক্রমণ হলে চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে যায়। এ ছাড়া পানি পড়া, জ্বালাযন্ত্রণা, পিঁচুটি ও চুলকানি হতে পারে। বাতাসের জলীয় কণাকে ভর করে ভেসে বেড়ায় অনেক ভাইরাস, যার মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাস একটি। এটি চোখে সংক্রমণ ঘটায়। কর্নিয়ায় ছোট ছোট দানা তৈরি হয়। ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে। তা ছাড়া শীতে ড্রাই আইসের সমস্যা বাড়ে। 

করণীয়

● বায়ুদূষণের এ সময় বাইরে বেরোলে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। এমন রোদচশমা বেছে নিন, যাতে চোখের পাশ, বাইরের দিক ঢাকা থাকে।

● ধুলাবালু এড়িয়ে চলতে হবে। খুব বেশি ভিড়ে না যাওয়াই ভালো।

● বারবার হাত দিয়ে কচলাবেন না। এতে হাতের ময়লা চোখে গিয়ে ক্ষতি যেমন হয়, তেমন চোখের রক্তজালিকা ছিঁড়ে গিয়ে বিপদ
বাড়তে পারে।

● চোখ ফুলে ব্যথা হলে গরম সেঁক দিন। তাপ লাগলে সেখানকার রক্তনালির প্রসারণ হবে, রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে। যদি রক্ত জমাট বেঁধে থাকে, ধীরে ধীরে সেরে যাবে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হলেই ফোলা ভাব কমবে। যন্ত্রণাও অনেক কমবে।

● ড্রাই আইসের সমস্যা হলে আই ড্রপ দিতে পারেন। কী ধরনের ড্রপ দেবেন, চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেবেন। 

আরও পড়ুন

● একটানা মুঠোফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রাখবেন না। চোখকে বিশ্রাম দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে মেনে চলতে পারেন ২০-২০-২০ নিয়ম। এ নিয়ম অনুসারে ২০ মিনিট পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার পর অন্তত ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরের কোনো বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি বারবার চোখের পলক ফেলাও জরুরি। 

● পর্যাপ্ত পানি পান করুন। শরীর যেন ডিহাইড্রেডেট না হয়। পানি পানের পাশাপাশি গরম স্যুপ, ডিটক্স পানীয় খেতে পারেন। এ ছাড়া ভিটামিন এ, সি, ই, জিঙ্ক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। খেতে হবে সবুজ শাকসবজি, মৌসুমি ফল, মাছ। ছোট মাছ চোখের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন সি আছে, এমন ফল খান বেশি করে। 

● তোয়ালে, বালিশ বা প্রসাধনী অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করবেন না। বিশেষ করে অন্যের ব্যবহার করা কাজল, মাসকারা, আইলাইনার ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না। 

যদি মনে হয় চোখ কড়কড় করছে, চোখ থেকে আঠালো তরল বের হচ্ছে, তবে দেরি না করে চক্ষু চিকিৎসককে দেখান।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ, চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন, বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা

আরও পড়ুন