গরুর মাংস থেকে হতে পারে কৃমির সংক্রমণ
গরুর মাংস ঠিকমতো রান্না বা সেদ্ধ করে না খেলে দেখা দিতে পারে জীবাণুর সংক্রমণ। বিশেষ করে যাঁরা কাবাব, মাংসের স্টেক খেতে ভালোবাসেন, তাঁদের এই কৃমির সংক্রমণ বেশি দেখা দিতে পারে। গরুর মাংসের মাধ্যমে ছড়ানো এ রোগের নাম গরুর ফিতা কৃমি বা বিফ টেপ ওয়ার্ম। ক্ষেত্রবিশেষে এই কৃমি বা পরজীবী ৫ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে!
সাধারণত কাঁচা বা আধা সেদ্ধ গরুর মাংস খেলে এ জীবাণু তথা ফিতা কৃমি মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রে আক্রমণ করে। যার ফলে বদহজম, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, ওজন হ্রাস, ক্ষুধামান্দ্য, পেটের পীড়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ ছাড়াই এ জীবাণু মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রে মাসের পর মাস থাকতে পারে। অনেক সময় এ কৃমির কিছু অংশ মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়, যা দেখা দিলেই রোগী বুঝতে পারেন তিনি কৃমি বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন।
মানুষের মলের মাধ্যমে এ ফিতা কৃমির ডিম পানিতে অথবা যেখানে–সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করলে ঘাসের সঙ্গে মিশে যায়। এই ঘাস বা পানির মাধ্যমে সে জীবাণু গরুর মধ্যে প্রবেশ করে। পরে গরুর মাংস ভালোভাবে সেদ্ধ না করে খেলে মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রে প্রবেশ করে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রে মল পরীক্ষা করলেই এ জীবাণু শনাক্ত করা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রাজিকুয়ান্টেল বা অ্যালবেনডাজল বা নিকলোসামাইড–জাতীয় ওষুধ খেলে এ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
তাই কাঁচা বা আধা সেদ্ধ মাংস খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। কাবাব বা মাংসের স্টেক খাওয়ার আগে তা সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
ডা. মুসআব খলিল, পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা