বয়স্কদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে

মজানের সময় বয়স্কদের কেউ কেউ অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে পারেন নাছবি: পেক্সেলস

বয়স বাড়ার সঙ্গে নানা রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে। এসব রোগবালাইয়ের জন্য বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয়। রমজানের সময় বয়স্কদের কেউ কেউ অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে পারেন না। আবার অনেকে বাধা সত্ত্বেও রোজা রাখতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

সঠিক সময়ে সঠিক খাবার গ্রহণ

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হজমশক্তি হ্রাস পায়, অল্প খেলেই পেট ফেঁপে যায়। অনেকে অতিরিক্ত মসলা ও তেলজাতীয় খাবার খেতে পারেন না। রমজান মাসে রকমারি ভাজাপোড়া খাবার দিয়ে ইফতার সাজানো হয়। এগুলোতে মসলা ও তেলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা বয়স্কদের খাওয়া ঠিক নয়। প্রয়োজনে তাঁদের জন্য আলাদা ইফতারির ব্যবস্থা করতে হবে। সাহ্‌রিতেও তাঁদের সহজপাচ্য খাবার দিন।

সঠিক সময়ে ওষুধ বা খাবার খেতে হবে বলে অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রোজা রাখতে পারেন না। অনেক পরিবারে দেখা যায়, অন্যরা রোজা রাখছেন বলে তাঁর জন্য আলাদা করে রান্না করা হয় না। অনেক সময়, আগের দিনের বাসি খাবারই গরম করে তাঁকে খেতে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে তাঁর বদহজম বা ফুড পয়জনিং হতে পারে।

যাঁদের ডায়াবেটিসের কারণে ইনসুলিন নিতে হয়, তাঁদের সময়মতো খাবার খাওয়া প্রয়োজন, হেরফের হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে।

কিডনি রোগ, ডায়াবেটিসের মতো রোগে খাবার খাওয়ার ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন
বয়স্কদের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত
ছবি: পেক্সেলস

সঠিক সময়ে ওষুধ

বয়স্কদের ওষুধ নেওয়ার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। অনেকের একসঙ্গে বেশ কিছু ওষুধ খেতে হয়। বয়স্ক ব্যক্তিরা কোন ওষুধ কোন সময়ে খেতে হবে, সেটা ভুলে যান। সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। যাঁরা রোজা রাখনে, তাঁদের ওষুধ খাওয়ার সময় পরিবর্তন করতে হয়। কোনটা ইফতারে খাবেন, আর কোনটা সাহ্‌রিতে—তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আবার কিছু ওষুধের ডোজ পরিবর্তন করতে হতে পারে, যেমন ইনসুলিন। সেটাও চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবর্তন করতে হবে। রোজা রাখা অবস্থায় যাঁরা ইনসুলিন নেন, তাঁরা যদি রোজা রাখা অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন, ঘাম হয়, বুক ধড়ফড় করে, চোখে ঝাপসা দেখে, সঙ্গে সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কত মেপে দেখতে হবে। সুগার কমে গেলে বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে। পরবর্তীকালে তিনি রোজা রাখতে পারেন। সন্ধ্যার পর থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত যথেষ্ট পানি পান করছেন কি না লক্ষ রাখুন।

বয়স্কদের সময় দিন

ইফতার ও সাহ্‌রির সময় বয়স্কদের নিয়ে একসঙ্গে খেতে বসুন। এমনকি তাঁরা যদি রোজা না–ও রাখতে পারেন, এতে যেন কোনো মনঃকষ্ট না পান, সেদিকে সচেতন থাকতে হবে।

ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি

আরও পড়ুন