শীতে হাঁপানি রোগী ভালো থাকবেন কীভাবে
অ্যাজমা বা হাঁপানি পুরোপুরিভাবে ভালো হয় না। কখনো নিয়ন্ত্রণে থাকে, আবার কখনো কখনো বেড়ে যায়, বিশেষ করে শীতে। হাঁপানি বা অ্যাজমা একটি মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি।
কিছু পরিস্থিতি, যেমন পশমযুক্ত প্রাণী (কুকুর, বিড়াল), ধূমপান, ধূপ ও ধোঁয়া, বিছানা-বালিশে ধুলাবালু, ঝাড়ু দেওয়া ধুলাবালু, ঝাঁজালো গন্ধ, শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, দৌড়ানো, খেলাধুলা, ভারী কাজ, সর্দি লাগা ও পেশাগত কারণে হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। যাঁদের হাঁপানি আছে, তাঁদের সাধারণত ফুলের বাগানে গেলে বাতাসে ভাসমান ফুলের পরাগরেণু নিশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালিতে প্রবেশের মাধ্যমে এই সমস্যা বাড়তে পারে। ব্যায়াম করার সময় হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। এ রকম অবস্থা প্রতিরোধ করার জন্য কিছু টিপস মেনে চলবেন—
ভারী ব্যায়াম শুরুর আগে বয়স ও ফিটনেস অনুযায়ী (৬ থেকে ১৫ মিনিট) কিছুটা হালকা ব্যায়াম (ওয়ার্মআপ) করে নিতে পারেন। ঠান্ডা, শুষ্ক ও দূষিত বাতাস পরিহার করে কিছুটা আর্দ্র, বিশুদ্ধ ও উষ্ণ বাতাসে ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম করার সময় কখনো মুখ দিয়ে নিশ্বাস নেবেন না। ঠান্ডা বাতাসে ব্যায়াম করার সময় আপনার নাক ও মুখ স্কার্ফ বা ফেস মাস্ক দিয়ে ঢেকে নিন। ব্যায়ামের আগে বা ফুলের বাগানে যাওয়ার আগে মন্টিলুকাস্ট-জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।
যাঁর হাঁপানির সমস্যা আছে, তাঁর ঘরে কম্বল ও কার্পেট না রাখাই ভালো। কারণ, এগুলোয় বেশি ধুলা জমে। ম্যাট্রেস, বালিশ ও লেপকে ধুলা প্রতিরোধী জিপারযুক্ত কাভার দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। চাদর ও কম্বল মাঝেমধ্যে গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। খড় দিয়ে তৈরি কোনো বালিশ বা ম্যাট্রেস ব্যবহার করবেন না।
ঘরের ভেতরে গুমোট মনে হলে সেই পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন। ধুলাযুক্ত কোনো কিছু ঝাড়া দেওয়ার সময় দরজা-জানালা সম্পূর্ণ খুলে দিন।
কাঠ, কেরোসিন বা গ্যাস দিয়ে রান্নার সময় ধোঁয়া থেকে বাঁচতে রান্নাঘরের জানালা কিছুটা খুলে রাখুন।
বাড়ির আশপাশে গাড়ি বা ফ্যাক্টরি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ধুলাবালু ও ফুলের পরাগরেণু থেকে বাঁচতে ঘরের জানালা বন্ধ রাখুন।
হাঁপানি রোগী যখন ঘরের বাইরে থাকেন, শুধু তখনই ফ্লোর ঝাড়ু দেওয়া, দেয়ালে রং করা, পোকা মারার স্প্রে ব্যবহার, ঝাঁজালো রান্না করে নিন। সেটা সম্ভব না হলে হাঁপানি রোগীকে এক ঘরে রেখে অন্য ঘরে কাজ করুন। আর এই সময়ে রোগীকে অবশ্যই মাস্ক বা স্কার্ফ দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
লেখক: এমডি গবেষক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা।