ফ্লুয়ের টিকা কারা নিতে পারবেন না?
ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যাতে সংক্রমিত হয় শ্বাসনালি ও ফুসফুস। ফ্লুতে আক্রান্ত হলে সাধারণত হালকা সর্দি-কাশি বা গলাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা নাক থেকে অনবরত পানি পড়ার মতো উপসর্গও দেখা দেয়। তবে এসব সাধারণ উপসর্গ থেকেই কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই প্রতিবছর নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে হেমন্ত বা শীতের শুরুর দিকে ফ্লুয়ের টিকা নিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। চলুন টিকা বিষয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় কি ফ্লুয়ের টিকার প্রয়োজন আছে?
গর্ভাবস্থায় ফ্লুয়ের টিকা খুবই প্রয়োজনীয়। মা এবং গর্ভের শিশু—উভয়ের জন্যই এটি উপকারী। ফ্লুয়ের টিকা গর্ভাবস্থায় মায়ের নিউমোনিয়া প্রতিরোধে যেমন সাহায্য করে, তেমনি আবার অকাল গর্ভপাত, গর্ভে শিশুমৃত্যু এবং সময়ের আগে (অর্থাৎ পূর্ণতা পাওয়ার আগে) শিশু জন্মানোর ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া টিকা গ্রহণকারী মায়ের গর্ভের শিশুও জন্মের পর কয়েক মাস পর্যন্ত ফ্লু থেকে সুরক্ষিত থাকে।
গর্ভের যেকোনো সময়ে নিরাপদে ফ্লুয়ের টিকা দেওয়া যায়। তাই গর্ভাবস্থায় ফ্লুয়ের টিকা দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রসব-পরবর্তী সময়েও ফ্লুয়ের টিকা নিতে কোনো বাধা নেই, বরং গর্ভকালে টিকা নেওয়া হয়ে না থাকলে প্রসব-পরবর্তী সময়েই নিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শিশুদের অন্যান্য টিকার সঙ্গে ফ্লুয়ের টিকা দেওয়া যাবে কি?
শিশুদের জন্য নির্ধারিত অন্যান্য সব টিকার সঙ্গে একই সময়ে ফ্লুয়ের টিকা দেওয়া যায়। তাতে কোনো অসুবিধা নেই। একই সঙ্গে নেওয়া অন্য রোগের টিকাও কার্যকর হবে, ফ্লুয়ের টিকাও কার্যকর হবে। তবে ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের কোনোক্রমেই ফ্লুয়ের টিকা দেওয়া যাবে না।
কারা টিকা নিতে পারবেন না?
যদি টিকা নেওয়ার সময় হালকা সর্দি-কাশি বা নাক বন্ধ থাকার মতো উপসর্গ থাকে, তাহলে টিকা দিতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে জ্বর হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী সময়ে টিকা দিতে হবে।
আগে কখনো ফ্লুয়ের টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ইতিহাস থাকলে পরবর্তী সময়ে ফ্লুয়ের টিকা নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
*ডা. মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম: জুনিয়র কনসালট্যান্ট, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা