কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে

শরীরে পুষ্টির জন্য কলা খুব উপকারী একটি ফলছবি: পেক্সেলস

খাবারদাবার নিয়ে আমাদের মধ্যে নানা রকম ধারণা চালু রয়েছে। যেগুলোর কিছুর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে, আবার কিছু একবারেই অবান্তর। তেমনই একটি ধারণা হলো, শীতকালে কলা খাওয়া নিয়ে। অনেকের ধারণা, শীতের সময় কলা খেলে সর্দি–কাশি হতে পারে।

প্রথমেই একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাওয়া প্রয়োজন, কলা কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নয় যে তা থেকে সর্দি–কাশির মতো সংক্রমণ হবে। তবে কলা একটি উচ্চ হিস্টামিনযুক্ত খাবার, যা মিউকাস বা শ্লেষ্মা বেশি তৈরি করে দিতে পারে। এ জন্য যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, যেমন অ্যাজমা, নাকে পানি ঝরা, হাঁচি ইত্যাদি তাঁদের ক্ষেত্রে কলা খেলে কখনো কখনো সমস্যা করতে পারে। এ ছাড়া কেউ সর্দি–কাশিতে ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে থাকলে, তার জন্যও ওই সময়টা কলা পরিহার করা ভালো।

কলা
ছবি: পেক্সেলস
  • শরীরে পুষ্টির জন্য কলা খুব উপকারী একটি ফল। পাকা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ফোলেট, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন ও ভিটামিন-বি। এগুলো প্রতিটিই শরীরকে কর্মক্ষম ও সুস্থ রাখতে খুবই প্রয়োজনীয়। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়।

  • কলায় থাকে প্রচুর ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে; বিশেষত শীতকালে যখন শারীরিক শ্রম কম করা হয়।

  • কলা আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা আমাদের মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে সাহায্য করে।

  • কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, তাই যাদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ আছে, তাদের কলা খাওয়ায় সীমাবদ্ধতা আছে।

  • ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে কোনো সমস্যা দেখা যায় না। তবে পাকা কলা যেহেতু বেশ মিষ্টি ফল, তাই যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে পাকা কলা বেশ ক্ষতির কারণ হতে পারে।

  • রাতে কলা না খাওয়াই ভালো, কারণ কলা একটি ভারী খাবার এবং পরিপাক হতে দীর্ঘ সময় নিতে পারে।

  • কিছু আমিষজাতীয় খাবারের সাথে কলা খেলে অনেক সময় পেটে গ্যাস হতে পারে।

  • অতিরিক্ত পাকা কলায় প্রোটিনের গঠন পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে, যা কিনা আরও বেশি মাত্রায় অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।

তবে সাধারণভাবে শুধু শীতকাল বলে কলা খেতে কোনো মানা নেই। বরং বড়–ছোট সবারই সঠিক পরিমাণে এই ফল খেলে তা শরীরের জন্য উপকারই হবে।

ডা. ফারাহ দোলা, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আরও পড়ুন