বাড়ি ফেরার এই মৌসুমে যদি অসুখে পড়তে না চান
ঈদ আসছে, আসছে গ্রীষ্মও। বাড়ছে গরমের তীব্রতা। আবহাওয়া অফিস বলছে, সামনের দিনগুলোতে গরম আরও বাড়বে। সারা দেশে বাড়তে শুরু করেছে টাইফয়েড, ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, কলেরাসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ।
এ বছর ঈদে লম্বা ছুটি পাচ্ছেন চাকরিজীবীরা। তাই অধিকাংশ রাজধানী বা শহরবাসী ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। চলাচলও হবে বেশি। গরমে দীর্ঘযাত্রা আর ঈদে বিভিন্ন ধরনের খাবারদাবার, দাওয়াত, অনিয়ম, অসচেতনতায় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই ঈদের ছুটিতে সুস্থতার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
সংক্রমণ এড়াতে কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যক। কেনাকাটা, জনসমাবেশ, ভ্রমণের সময় বা যেকোনো ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরুন। মাস্ক শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে। বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। তাই বেশি ভিড় এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো।
ছোট-বড় সবাইকে বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত না ধুয়ে নিজের চোখ-নাক-মুখ (টি-জোন) স্পর্শ করবেন না। ঘরে-বাইরে খাওয়ার আগেও হাত ধুতে হবে। এতে ডায়রিয়াসহ খাদ্যবাহিত রোগ থেকেও মুক্তি মেলে।
প্রচণ্ড গরমে পথঘাটে অনিরাপদ পানি, শরবত বা পানীয় খাওয়া খুবই বিপজ্জনক। ঈদযাত্রায় অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে রাখতে হবে। পথেঘাটে ইফতার বা খোলা খাবার না কিনে যাত্রাপথের জন্য শুকনা খাবার, পরিষ্কার ফল বা বাসায় তৈরি খাবার বহন করা উচিত। অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশু; যারা রোজা থাকতে পারেন না, তাঁদের খাবারও সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই উত্তম।
এই অসহ্য গরমে ভ্রমণের সময় পথে হালকা রঙের, আরামদায়ক ও সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে, এমন পোশাক এবং নরম-আরামদায়ক জুতা-স্যান্ডেল পরা উচিত।
ঈদে ঘুরতে বের হলে ভরদুপুর এড়িয়ে চলাই উত্তম। বাইরে গেলে বারবার বিশুদ্ধ পানি বা তরল-জাতীয় খাবার খান। হালকা রঙের সুতি কাপড়, ছাতা ও রোদচশমা ব্যবহার করুন। তবে বিনা কারণে রোদে বেশি ঘোরাঘুরি না করাই ভালো। আবার রোদ থেকে এসে খুব ঠান্ডা পানি খাওয়া বা সঙ্গে সঙ্গে গোসল করা ঠিক নয়।
যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, হাঁপানি বা অ্যালার্জি ইত্যাদি) আছে, তাঁরা প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল, ওমিপ্রাজল, অ্যান্টাসিড, অ্যান্টিহিস্টামিন, খাওয়ার স্যালাইন এবং ছোট্ট একটা ফার্স্ট এইড বক্স (তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, স্যাভলন) সঙ্গে নিতে পারেন।
ঈদযাত্রা আনন্দের পরিবর্তে যেন বিষাদময় না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক ও যত্নবান হতে হবে।