প্রতিদিন একটি আপেল ডাক্তারকে দূরে রাখে—এই প্রবাদ বাক্য সবার জানা। কিন্তু কোন আপেল সবচেয়ে ভালো কাজ করে? লাল নাকি সবুজ রঙের আপেল?
আপেলে রয়েছে উচ্চ মানের ফাইবার, সহজে হজম হওয়ার ক্ষমতা, প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। মূলত পিগমেন্টের কারণে আপেলের রং ভিন্ন হয়। অ্যান্থোসায়ানিন লাল রঙের জন্য দায়ী। সবুজ আপেলে থাকে ক্লোরোফিল নামক পিগমেন্ট। লাল আপেলের খোসা বেশ পাতলা আর কিছুটা মিষ্টি ও রসাল হয়। সবখানেই এই আপেল পাওয়া যায়।
সবুজ আপেল ও লাল আপেলে একই রকম পুষ্টি রয়েছে। তবে সবুজ আপেল কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর। সবুজ আপেলে কম চিনি ও কার্বোহাইড্রেট এবং বেশি ফাইবার, প্রোটিন, পটাশিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন কে থাকে। পুষ্টির একমাত্র প্রধান পার্থক্য হচ্ছে ভিটামিন এ, যা লাল আপেলের তুলনায় সবুজ আপেলে প্রায় দ্বিগুণ থাকে। আবার লাল আপেলে সবুজ আপেলের তুলনায় বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে।
কোনটি কার জন্য উপকারী
লাল আপেলে কার্বোহাইড্রেট, সুগার বেশি ও ফাইবার কম। সবুজ আপেলে বেশি ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট ও সুগার কম। এটি লো জিআই গ্রুপের ফল ও ক্যালরি তুলনামূলক কম। সুতরাং যাঁরা ওজন কমাতে চান, ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের জন্য সবুজ আপেল উপকারী।
আবার সবুজ আপেলে ভিটামিন এ লাল আপেলের প্রায় দ্বিগুণ। এটি দৃষ্টিশক্তির উন্নতি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্রণের ঝুঁকি কমাতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
সবুজ আপেল ও লাল আপেলে একই রকম পুষ্টি রয়েছে। তবে সবুজ আপেল কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর।
লাল আপেল অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা আমাদের কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। পেকটিন, কোয়ারেকটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েড—এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সবুজ আপেলে থাকলেও লাল আপেলে পরিমাণটা বেশি। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যাল কমিয়ে দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোষের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায় বলে ত্বক থাকে তারুণ্যোজ্জ্বল।
মনে রাখা ভালো
● দুই বছরের আগে বাচ্চাকে আপেল স্লাইস না দেওয়াই ভালো। শিশুর বয়স ৮–৯ মাস হলে আপেল পিউরি করে খাওয়ানো ভালো। আপেল পিউরি ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার সময় থেরাপিউটিক ডায়েট হিসেবেও কাজ করে।
● কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আপেল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
●আপেল কেটে রেখে দিলে তা কিছুক্ষণের মধ্যে বাদামি বর্ণের হয়ে যায়। লেবুপানিতে বা আনারসের জুস দিয়ে মাখিয়ে ঢেকে রেখে ব্রাউনিং রিঅ্যাকশন প্রতিরোধ করা যায়।
নাজনীন এস মৌসুমী, পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা