লেবু নয়, লেবুর খোসাই ভিটামিন সির ভালো উৎস
সাধারণত লেবুর রসই গ্রহণ করা হয় খাবারের সঙ্গে, কিংবা লেবুর রস দিয়েই তৈরি করা হয় পানীয়। লেবুর খোসা কেউ খুব একটা খান না। এই তিতকুটে স্বাদের বস্তুটিকে ‘খাদ্য’ হিসেবে গ্রহণ করাটা বেশ মুশকিল ব্যাপারই বটে। রসনার তৃপ্তির জন্য তো বটেই, ভিটামিন সির উৎস হিসেবেও লেবুর রস জনপ্রিয়; কিন্তু বিজ্ঞান বলছে, লেবু নয়, লেবুর খোসাই ভিটামিন সির ভালো উৎস।
লেবুর রসে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড। এই সাইট্রিক অ্যাসিডই লেবুর রসের টক স্বাদের কারণ। সাইট্রিক অ্যাসিড কিন্তু ভিটামিন সি নয়। ভিটামিন সি হলো অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এই অ্যাসকরবিক অ্যাসিড পাওয়া যায় লেবুর খোসায়। লেবুর খোসা নিয়ে এমন নানান তথ্য জানান রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
সব লেবুর খোসা কিন্তু খাওয়াও যায় না। যেসব লেবুর খোসা পুরু, যাতে খানিকটা মিষ্টি ভাব থাকে, কেবল সেগুলোই খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে লেবুর খোসা খাওয়া যেতে পারে—
ঝালমুড়ি বা চানাচুর মাখানোর সময় সামান্য পরিমাণে লেবুর খোসা কুচি যোগ করে দিতে পারেন। পথের ধারে যাঁরা এ ধরনের খাবার বিক্রি করেন, তাঁদেরও কিন্তু এমনটা করতে দেখা যায়। আপনি বাড়িতেই এভাবে ঝালমুড়ি বা চানাচুর মাখিয়ে নিতে পারেন।
সালাদ তৈরির সময়ও একইভাবে লেবুর খোসা বা কুচি সামান্য যোগ করে নিতে পারেন।
তৈরি করতে পারেন ডিটক্স ওয়াটার
লেবুর বড় একটি টুকরা নিন। ২৫০ মিলিলিটার পানিতে যোগ করুন টুকরাটি। চাইলে স্বাদের জন্য যোগ করতে পারেন একটুকরা মাল্টা বা এক কোয়া কমলালেবু; খোসাসহ বা খোসাছাড়া কমলালেবুর কোয়া দেওয়া যেতে পারে। আবার চাইলে কিছু পুদিনাপাতা বা ধনেপাতাও যোগ করা যায় বাড়তি স্বাদের জন্য। পাত্রের মুখ ঢেকে এক থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে ডিটক্স ওয়াটার। তবে ডিটক্স ওয়াটার তৈরির পর একবারেই খেয়ে নিতে হবে পুরোটা। ঠান্ডা আমেজ পেতে চাইলে, অর্থাৎ ফ্রিজে রাখতে হলে এমন পাত্রে ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করবেন, যেটির মুখ খুব ভালোভাবে আটকানো যায়। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বায়ুরোধী পাত্র বেছে নিতে হবে আপনাকে। জ্যাম বা জেলির খালি কৌটা পরিষ্কার করে নিয়ে এ কাজে ব্যবহার করতে পারেন; পানির ফ্লাস্কেও তৈরি করা যায় ডিটক্স ওয়াটার।
ভাতের সঙ্গে লেবুর খোসা
ভাতের সঙ্গেই আপনি কামড়ে খেতে পারেন লেবুর খোসা। লেবুর রস মাখানো ভাত-তরকারি খাওয়ার সময়ই আপনি চাইলে এর সঙ্গে লেবুর খোসা কামড়ে খেয়ে নিতে পারেন। তবে খুব বেশি পরিমাণ লেবুর খোসা খাওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনি যে লেবুর টুকরাটি থেকে রস নিয়েছেন, সেই টুকরার খোসার অংশটি খাওয়াই যথেষ্ট।
লেবুর খোসা খেলে কারও কারও অ্যাসিডিটির প্রবণতাও হতে পারে। লেবুর খোসা খেয়ে কোনো সমস্যা বা অস্বস্তি হলে লেবুর খোসা এড়িয়ে চলুন।