সালমান খান ভুগছেন সুইসাইড ডিজিজে, জেনে নিন এ রোগ সম্পর্কে
‘সুইসাইড ডিজিজ’ হিসেবে পরিচিত এক রোগে আক্রান্ত বলিউড তারকা সালমান খান। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে রোগটি সম্পর্কে কথা বললেন খোলামেলাভাবেই। ১৭ বছরের বেশি সময় এই রোগে ভুগছেন তিনি। আদতে কী ধরনের রোগ এই সুইসাইড ডিজিজ? ভক্তদের অনেকেই আতঙ্কে আছেন, তাহলে কি সালমান আত্মহত্যার মতো কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেন?
আদতে এটা সে ধরনের কোনো মানসিক রোগ নয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে মুখের এক পাশে তীব্র ব্যথা হয়। এই ব্যথা কখনো কখনো হয়ে ওঠে রীতিমতো অসহনীয়। কথা বলা, হাসা, খাবার বা পানি খাওয়া, মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া, শেভ করা, দাঁত ব্রাশ করার সময় এই ব্যথা শুরু হতে পারে। এমনকি সামান্য বাতাসের ঝটকাতেও ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে। মেকআপ করার সময়ও শুরু হতে পারে ব্যথা। ভাবুন তো একবার, কী মুশকিল ব্যাপার।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহুবার ব্যথায় ভুগতে হতে পারে এই রোগে আক্রান্ত হলে। রোজকার স্বাভাবিক কাজের সময়ই যে ব্যথা শুরু হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সে ব্যথায় ভুগতে থাকা মানুষটার জীবন কতটা বেদনাদায়ক! এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথার ধরন ভীষণ কষ্টদায়ক বলে কেউ কেউ একে সুইসাইড ডিজিজ বলে থাকেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া’। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের নিউরোমেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. রমা বিশ্বাস।
কী ঘটে এই রোগে
মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনো কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রইল। সেই চাপের কারণেই তীব্র ব্যথা অনুভব করেন রোগী। কোনো টিউমার যদি স্নায়ুটিকে চাপ দেয়, তাহলেও এমনটা হতে পারে। অন্যান্য কিছু স্নায়বিক রোগেও এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
কেন হয়, কাদের হয়
কেন এই স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট কোনো জীবনপদ্ধতি এর জন্য দায়ী নয়। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
চিকিৎসা কী
ঘরোয়া প্রাথমিক চিকিৎসায় এই ব্যথা সারে না, বরং এর জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ওষুধ। জীবনধারায় কোনো পরিবর্তন এনে রোগের তীব্রতা কমানো সম্ভব হয় না। সুস্থ থাকতে তাই ওষুধ সেবন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। স্নায়ুর ব্যথা কমানোর ওষুধ কিন্তু সাধারণ ব্যথানাশকের চেয়ে আলাদা। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ আবশ্যক। সেসব ওষুধেও ব্যথা না সারলে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিতে হতে পারে।