বর্ষাকালের অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার পরিবর্তন শরীরে ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও অসুস্থতা দেখা দেয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে যা খাবেন:
হলুদ, দুধ ও চা
হলুদে কারকিউমিনসমৃদ্ধ উপাদান রয়েছে, যা শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্যের। নিয়মিত হলুদ–চা ও ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধে হলুদ যোগ করে খেলে সাধারণ অসুস্থতা ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে।
প্রোবায়োটিক ও ফার্মেন্টেড ফুড
প্রোবায়োটিক অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দই প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ খাবার, যা বর্ষায় চমৎকার স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে। আচার ও পান্তাও খেতে পারেন।
স্যুপ ও স্টু
বৃষ্টির দিনে তাজা শাকসবজি দিয়ে স্যুপ ও স্টু শুধু সুস্বাদু নয়, প্রয়োজন মিটবে ভিটামিন ও খনিজেরও।
লেবু
লেবু ভিটামিন সি-এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সালাদ বা কুসুম গরম পানিতে লেবু সর্দি-কাশিসহ সাধারণ অসুখ থেকে বাঁচতে বেশ কার্যকর।
মসলা–চা
মসলা চা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আদা, এলাচি, দারুচিনি যোগ করে এক কাপ গরমমসলার চা ওষুধের মতো কাজ দেবে।
রসুন
রসুনে অ্যালিসিন রয়েছে, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটি সর্দি-কাশি সংক্রমণে বেশি কার্যকর।
আদা
আদা শরীরে উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা গলাব্যথা উপশমে ও ফ্লুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই চা বা অন্য খাবারে আদা যোগ করুন।
বাদাম
স্ন্যাকস হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বাদাম গ্রহণ করুন। এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। বর্ষায় এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াবে।
করলা
বর্ষায় তিতা সবজি খুব উপকারী, যেমন করলা। এটি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সতর্কতা
● শাকসবজিতে ময়লা পানি ও জীবাণুর সংস্পর্শ বেশি থাকে বলে পেটে সংক্রমণ হতে পারে, ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে খেতে হবে।
● এ মৌসুমে দূষণের কারণে সামুদ্রিক খাবার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, যা খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
● এ সময় বেশি আর্দ্র আবহাওয়ায় ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার কম খাবেন।
● রাস্তার খাবার খেলে হতে পারে টাইফয়েড, ডায়রিয়ার মতো পানিবাহিত রোগ।
● সালাদ ও কাঁচা খাবারে ব্যাকটেরিয়া ও প্যাথোজন থাকতে পারে, তাই রান্না করে খাওয়া উচিত।
●বর্ষায় মাশরুম না খাওয়াই ভালো। কারণ, এতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এটি।
লিনা আকতার, পুষ্টিবিদ, রায়হান হেলথ কেয়ার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর