শ্রবণশক্তি কমায় শব্দদূষণ

প্রতীকী ছবি

অত্যধিক জোরালো শব্দ শ্রবণকোষ ধ্বংস করতে পারে, যার ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। একে বলা হয় শব্দ-প্ররোচিত শ্রবণশক্তি হ্রাস। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা অত্যধিক শব্দ পাই, যেমন কারখানার যন্ত্রপাতি, ভবনের নির্মাণস্থল, উচ্চ শব্দযুক্ত সরঞ্জামের ব্যবহার। এ ছাড়া আছে বিনোদনমূলক উৎস, যেমন শুটিং, ডিসকো ও ব্যক্তিগত স্টেরিওর ব্যবহার। গাড়ির হর্নও একটি বড় কারণ। বেশি শব্দদূষণ হয় বিমানবন্দর ও ট্রাফিক পয়েন্টের মতো জায়গাগুলোয়।

পেশাগত বধিরতা একটি ক্ষতিপূরণযোগ্য রোগ। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের জন্য বর্তমানে গ্রহণযোগ্য শব্দের মাত্রা ৯০ ডেসিবেল। অনুমোদনযোগ্য শব্দের এক্সপোজার কাজের ব্যাপ্তিকাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এ পরিবর্তন এ রকম: ৯০ ডেসিবেল—৮ ঘণ্টা/দিন, ৯২ ডেসিবেল—৬ ঘণ্টা/দিন, ৯৫ ডেসিবেল—৪ ঘণ্টা/দিন, ১০০ ডেসিবেল—২ ঘণ্টা/দিন, ১০৫ ডেসিবল—১ ঘণ্টা/দিন।

কী ঘটে

শব্দের ৯০ ডেসিবেলের বেশি মাত্রা কানের মধ্যে কক্লিয়ারের পরিবর্তন ঘটায়। প্রাথমিকভাবে শব্দের এক্সপোজার অস্থায়ী থ্রেশহোল্ড শিফটের (টিটিএস) দিকে পরিচালিত করবে; যেখানে কক্লিয়ারের কোনো রোগগত পরিবর্তন নয়, শুধু বিপাকীয় ক্লান্তি দেখা দেয়। ক্রমবর্ধমান ও বারবার শব্দের সংস্পর্শে আসার ফলে বাইরের চুলসদৃশ হিয়ার কোষগুলোর ক্ষতি হতে থাকে। প্রথম থেকে তৃতীয় সারির ক্ষতি হওয়ার পর ভেতরের হিয়ার কোষগুলোরও ক্ষতি হয়।

ক্লিনিক্যাল বৈশিষ্ট্য

  • টিটিএস কানে বেশি বেশি শব্দ হওয়া তৈরি করতে পারে।

  • স্থায়ী থ্রেশহোল্ড শিফট (পিটিএস) প্রায়ই উপসর্গবিহীন। এটি পরে বধিরতা তৈরি করে এবং কথা বলার বোধশক্তি কমে যায়। পরীক্ষা করলে কানের পর্দা স্বাভাবিক দেখায়। কিন্তু অন্যান্য পরীক্ষায় কানের বধিরতা দেখায়।

প্রতিরোধ

  • উচ্চ শব্দজনিত এলাকা পরিহার করা।

  • শব্দ হয় এ রকম পরিবেশে কাজ করলে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করা, যা শব্দদূষণের তিন ভাগের এক ভাগ প্রতিক্রিয়া কমায়।

  • গাড়ির হর্ন কমাতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • কলকারখানা লোকালয়ের কাছে হওয়া উচিত নয়।

  • অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা