ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া কি একসঙ্গে হয়

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটি ইনফেকশনেরই বাহক মশা
প্রতীকী ছবি

ডেঙ্গু বর্তমানে এক আতঙ্কের নাম। প্রতিবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ বছরের শুরুর দিকে আক্রান্তের হার তুলনামূলক কম থাকলেও পরে বিগত বছরের ধারাই অব্যাহত রেখেছে।

এখন সারা বছরই কমবেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। এর সঙ্গে এবার নতুন যোগ হয়েছে চিকুনগুনিয়া। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন, ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া কি একসঙ্গে হয়? যদি হয়, তবে সে ক্ষেত্রে লক্ষণ-জটিলতা কি বেশি হবে বা আলাদা কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে কি?

দুটি ইনফেকশন একসঙ্গে হলে আলাদা আলাদাভাবে শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে
ছবি: প্রথম আলো

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া কি একসঙ্গে হতে পারে

এ দুই ইনফেকশন একসঙ্গে হতে পারে, তবে ব্যাপারটি এখন পর্যন্ত বিরল। এ পর্যন্ত কিছু রোগী পাওয়া গেছে। আগেও বিচ্ছিন্নভাবে এ রকম একসঙ্গে ইনফেকশনের ইতিহাস আছে। বিভিন্ন দেশে কিছু কেস রিপোর্ট আছে, বাংলাদেশেও এ রকম কিছু রোগীর কেস রিপোর্ট হয়েছে।

কীভাবে সম্ভব

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটি ইনফেকশনেরই বাহক একই মশা। একই সঙ্গে দুটি ভাইরাসের প্রকোপ বাড়লে এ রকম একসঙ্গে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। বাহক মশা একই সঙ্গে দুটি ইনফেকশন বহন করতে পারে। আবার ক্রস রিঅ্যাকটিভিটি নামক জটিল প্রক্রিয়ায় অ্যান্টিবডি থেকে এ রকম ঘটনা হতে পারে।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিতেই শরীরে র‍্যাশ দেখা যেতে পারে।
প্রতীকী ছবি

উপসর্গ

সাধারণ উপসর্গগুলোই বেশি লক্ষণীয়। যেমন জ্বর, মাথাব্যথা। এ ছাড়া শারীরিক দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, শরীরব্যথা, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা—এগুলোও থাকতে পারে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিতেই শরীরে র‍্যাশ দেখা যেতে পারে। তবে এবার চিকুনগুনিয়ায় র‍্যাশ বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া অনেক রোগীর শুরুর দিকে ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া একসঙ্গে হলে কী করবেন

এ দুটি ইনফেকশন একসঙ্গে হলে তুলনামূলকভাবে রোগের প্রকোপ বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে। দুটি ইনফেকশন আলাদা আলাদাভাবে শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আলাদা আলাদা ইনফেকশনের তুলনায় একসঙ্গে ইনফেকশনে রোগীর জটিলতা ও মৃত্যুহার সামান্য বেশি। তবে এ ব্যাপারে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন আছে।

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার একসঙ্গে ইনফেকশন নিয়ে আগেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি সচরাচর ঘটনা নয়, খুব কমসংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। তবে উপসর্গ সন্দেহ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে থাকতে হবে।

লেখক: ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি