ডায়েটিশিয়ান নাকি নিউট্রিশনিস্ট, কখন কার কাছে যাবেন
আশপাশে কান পাতলেই শোনা যায়, ‘দোস্ত, মোটা হয়ে যাচ্ছি!’ কিংবা ‘ওজন খুব কম রে, বাড়াতে পারছি না!’ এ ধরনের সমস্যা সমাধানে দরকার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। কিন্তু কার কাছে যাবেন? ডায়েটিশিয়ান নাকি নিউট্রিশনিস্ট? আমরা অনেকে শব্দ দুটি নিয়ে দোটানায় পড়ে যাই। চলুন, ডায়েটিশিয়ান ও নিউট্রিশনিস্ট নিয়ে জেনে নেওয়া যাক।
দেশে দেশে এই শব্দ দুটির প্রয়োগ এক নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ডায়েটিশিয়ান হলেন স্বীকৃত খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ। তাঁরা চিকিৎসার মাধ্যমে পুষ্টি থেরাপি ও পরামর্শ দেন। কিছু রাজ্যে ডায়েটিশিয়ানরা নিজেদের নিউট্রিশনিস্ট (পুষ্টিবিদ) হিসেবে পরিচয় দেন। অর্থাৎ সব জায়গায় এর অর্থ এক নয়।
তাহলে কোনটার সংজ্ঞা কী?
ডায়েটিশিয়ান
বিভিন্ন দেশে ডায়েটিশিয়ানরা সাধারণত পুষ্টি ও খাদ্য বিষয়ে উচ্চশিক্ষিত। এর মধ্যে থাকে খাদ্যবিজ্ঞান, পুষ্টি ও মানবজীবনে খাদ্যের প্রভাব। বিস্তৃত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডায়েটিশিয়ানরা মেডিকেল নিউট্রিশন থেরাপি ও পুষ্টিগত পরামর্শ দেওয়ার দক্ষতা অর্জন করেন। দিতে পারেন কিছু ওষুধও।
নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান হতে সরকারের ঠিক করা মানদণ্ড মেনে উত্তীর্ণ হতে হয়। তার আগে এই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্জন করতে হয় স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। জীববিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান, রসায়ন, প্রাণরসায়ন, অজৈব রসায়ন, শারীরতত্ত্ব (ফিজিওলজি) ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি বিশেষায়িত বিষয়ে পড়েও এই পেশায় আসা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ডায়েটিশিয়ান হতে প্রয়োজন পড়ে স্নাতকোত্তরের।
ডায়েটিশিয়ানদের কাজের ক্ষেত্র প্রধানত চারটি—ক্লিনিক্যাল, খাদ্য পরিষেবা ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি ও গবেষণা। ক্লিনিক্যাল ও বহির্বিভাগের ডায়েটিশিয়ানরা পুষ্টি শিক্ষা দিতে হাসপাতালে কাজ করতে পারেন।
নিউট্রিশনিস্ট
কিছু দেশে ডায়েটিশিয়ান না বলে বলা হয় নিউট্রিশনিস্ট। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতায় তাঁরাও ডায়েটিশিয়ানদের মতোই। যুক্তরাষ্ট্রে ‘নিউট্রিশনিস্ট’ শব্দটি দিয়ে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যাঁদের পুষ্টিবিদ্যার ওপর বড় পরিসরের যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ আছে। তবে অনেক রাজ্যেই পুষ্টিবিদ হতে বিশেষ কোনো শর্ত নেই। পুষ্টি বা খাদ্য সম্পর্কে আগ্রহী হলেই এই পরিচয় দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে এই নিউট্রিশনিস্টরা মেডিকেল নিউট্রিশন থেরাপি ও পুষ্টি পরামর্শ দিতে পারেন না।
কার কাছে যাবেন
বাংলাদেশে পুষ্টিসংক্রান্ত বিষয়ে স্নাতক করার পর ডায়েটিশিয়ান পেশায় কাজ করা যায়। তবে সাধারণত উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁরা পুষ্টিবিদ পরিচয়ে সেবা দেন। তাই আপনার খাদ্যাভ্যাসসংক্রান্ত পরামর্শের প্রয়োজন হলে ডায়েটিশিয়ানের কাছে যেতে পারেন। আর শারীরিক পুষ্টিসংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে যেতে পারেন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নিউট্রিশনিস্টের কাছে।