উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। এটি রক্তচাপ কমাতে ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। তবে ব্যায়াম শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি সব ধরনের শারীরিক ব্যায়ামই করতে পারবেন, তবে কিছু নিয়ম ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন রোগীর বয়স, ওজন, উচ্চতা ও সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে ব্যায়ামের তীব্রতা নির্ধারণ করা।
যে ব্যায়াম করতে পারেন
● হাঁটা সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ ব্যায়াম। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটলে হৃদ্যন্ত্রের উপকার হয়। প্রাথমিকভাবে ধীরগতিতে শুরু করে ধীরে ধীরে গতি বৃদ্ধি করুন।
● সাইকেল চালানো একটি কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম, যা হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য সাইকেল চালান।
● সাঁতার পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও শরীরের ওপর কম চাপ সৃষ্টি করে। সপ্তাহে দু-তিন দিন দৈনিক ৩০ মিনিটের জন্য সাঁতার কাটুন।
● যোগব্যায়াম রিল্যাক্সেশন ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক। বিভিন্ন স্ট্রেচিং ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রতিদিন সকালে ২০ থেকে ৩০ মিনিট যোগব্যায়াম করুন।
● অ্যারোবিক ব্যায়াম হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য জগিং, নাচ বা জাম্পিং জ্যাকস করুন।
● হালকা ওজন উত্তোলন মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ফিটনেস বাড়ায়। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট এ ব্যায়াম করুন।
সতর্কতা
● ব্যায়ামের আগে-পরে রক্তচাপ পরীক্ষা করুন।
● ব্যায়ামের সময় সঠিক পোশাক ও জুতা পরুন।
● পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
● ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ান।
● অস্বস্তি বা সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কখন ব্যায়াম নিষিদ্ধ
● রোগীর রক্তচাপ খুব বেশি হলে (১৮০/১১০ এমএমএইচজি বা এর বেশি)।
● যদি উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন বা অ্যারিদমিয়া থাকে।
● কোনো কোনো রক্তচাপের ওষুধ শুরু করার পর আকস্মিক রক্তচাপ কমে যাওয়ার প্রবণতা হয়। নতুন কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করলে সাময়িকভাবে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
● ব্যায়াম করার সময় বুকব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অত্যধিক মাথাঘোরা বা অচেতন হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে ব্যায়াম বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
●গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অন্য জটিলতা, যেমন জ্বর, সংক্রমণ, হৃদ্রোগ, কিডনির সমস্যা ইত্যাদি থাকলে ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা