ঈদে দীর্ঘ ভ্রমণে ব্যথার রোগীদের করণীয়

কোমর বা হাঁটুর ব্যথা খুবই পরিচিত সমস্যা। ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হন। শরীরের অন্যান্য মাংসপেশির তুলনায় কোমরের পেশি একটু বেশি অরক্ষিত। এগুলো সহজে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। তাই ক্ষতিগ্রস্তও হয় সহজে। এর ওপর দেহের ভার বহন করতে হয় মেরুদণ্ড তথা কোমরকে। দীর্ঘ ভ্রমণে অনেক সময় এসবের ব্যথা বেড়ে যায়।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনেকেই দীর্ঘ যাত্রা করছেন। বাস–ট্রেন, উড়োজাহাজ, রিকশা বা ভ্যান যেকোনো যানবাহনেই ভ্রমণে ব্যথা বাড়তে পারে। দীর্ঘ সময় বসে থেকে অনেক সময় হাঁটু ফুলে যায়, পায়ে পানি চলে আসে ও ব্যথা করে। আরও গুরুতর হলে পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধে; যাকে ডিভিটি বলে। এমন হলে পা ফুলে যায় ও লালচে রং ধারণ করতে পারে। তাই কোমর ও হাঁটুব্যথার রোগীদের জন্য দীর্ঘ ভ্রমণ হয়ে ওঠে কষ্টকর।

কী করবেন

  • ভ্রমণ যেভাবেই হোক, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে না থেকে একটু হাঁটাহাঁটি করা ও সচল থাকা উচিত; যেমন বাস কোথাও থামলে বা ফেরিঘাটে নেমে একটু চলাফেরা করবেন। ট্রেনের ভেতর হাঁটাহাঁটি করবেন। হাঁটাহাঁটির সুযোগ না থাকলে বসে থেকেই পায়ের পেশি স্ট্রেচিং বা ব্যায়াম করুন। পায়ের পাতা চারদিকে ঘোরান। হাঁটু ভাঁজ করে ওপরে বুকের কাছে তুলুন আর নামান।

  • যাঁদের পায়ে পানি আসার প্রবণতা আছে, তাঁরা কোনো কিছুর ওপর পা তুলে একটু উঁচু করে বসুন।

  • বেশি আঁটসাঁট জুতা পরবেন না। হাঁটুতে একটা ‘নি ক্যাপ’ পরে নিতে পারেন বা কোমরে ব্যথার রোগীরা কোমরে বেল্ট পরতে পারেন; যাতে ঝাঁকুনিতে সমস্যা না হয়।

  • ব্যথা হলে ভ্রমণ শেষে হাঁটু বা কোমরে গরম সেঁক নিতে পারেন।

  • কোমরে ব্যথা হলে চট করে ভারী ব্যাগ বা সুটকেস তুলবেন না। নিচু হয়ে কোমর বাঁকিয়ে ভারী কিছু তুলবেন না।

  • ব্যথা কমানোর লোকাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি স্প্রে বা মলম রাখতে পারেন সঙ্গে।

এ ছাড়া বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন। আলতোভাবে ব্যথানাশক মলম লাগাতে পারেন। প্রচুর পানি খাবেন। পানিশূন্যতা দেখা দিলে পায়ের পেশিতে ক্র্যাম্প হয় বেশি। বেশি কষ্ট ও সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

  • অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন, চিফ কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা