শিশুকে কখন থেকে ডিম খেতে দেওয়া যাবে

ডিম একটি প্রোটিনজাতীয় খাবার
ছবি: পেকজেলস ডটকম

মায়েরা নবজাতক শিশুদের খাবারের ধরন নিয়ে দুশ্চিন্তা ও দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। আমরা জানি, ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধই শিশুর জন্য পূর্ণাঙ্গ খাবার। ছয় মাস বয়সের পর শিশুকে বাড়তি খাবার দিতে হয়। এ সময়ে কী খাওয়াবেন বা কী পরিমাণে খাওয়াবেন, কী দিয়ে শুরু করবেন—তা অনেক মা বুঝতে পারেন না। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে, ডিম দিলে অ্যালার্জি বা পেট খারাপ হবে কি না কিংবা শিশুর খাবারে ডিম যোগ করবেন কখন থেকে। এ বিষয়ে পাঁচজন পাঁচ রকম মতামত দিয়ে থাকেন। ডিম একটি সুপার ফুড। শিশুর মানসিক বিকাশ ও শরীর গঠনে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার।

কী পরিমাণ ডিম দেবেন

ডিম একটি প্রোটিনজাতীয় খাবার। একটি মাঝারি আকারের ডিম থেকে ৬-৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। জন্মের সময় একটি বাচ্চার ওজন তিন কেজি হলে, ছয় মাস বয়স শেষে বাচ্চার ওজন হওয়া উচিত আট কেজি। এমন ওজনের একটি শিশুর দিনে প্রায় ১৪.৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার। এ চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু মায়ের বুকের দুধ থেকে পেয়ে থাকে। ৮-৯ গ্রাম প্রোটিন বাড়তি খাবারের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়।

আরও পড়ুন

এ অবস্থায় শিশুকে সারা দিনে একটা ডিম দিলে সে প্রায় ৭ গ্রাম প্রোটিন পেয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে অন্য কোনো প্রোটিনজাতীয় খাবার দেওয়া যাবে না। তাই সম্পূর্ণ প্রোটিন ডিম থেকে না দিয়ে, মাছ–মাংস ও ডাল থেকেও দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছয় মাস বয়স থেকে সম্পূর্ণ ডিম না দেওয়া উচিত। অর্ধেক ডিম থেকে ৩-৩.৫ গ্রাম প্রোটিন পাবে। দুপুর ও রাতে ১০ গ্রাম করে মাছ–মাংস দিলে সেখান থেকে প্রায় ৪ গ্রাম প্রোটিন পাবে। বাকি ১-২ গ্রাম প্রোটিন ডাল ও সবজি থেকে পাবে। তাই ছয় মাস থেকে শিশুর খাবারে অর্ধেক ডিম কুসুমসহ দেওয়া যাবে।

দেশি মুরগির ডিম আকারে ছোট হয়। একটা দেশি মুরগির ডিমে ৩-৩.৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তাই ছয় মাস বয়সে বাচ্চার ওজন আট কেজি হলে, একটা সম্পূর্ণ দেশি মুরগির ডিম দেওয়া যাবে।

কত মাস বয়সে সম্পূর্ণ ডিম

শিশুর বৃদ্ধি যদি ঠিক থাকে, তবে ৯ মাস বয়সের পরই সম্পূর্ণ ডিম দেওয়া যাবে। কারণ, ৯ মাস বয়সে শিশুর ওজন ১০ কেজি হলে, ওজন অনুযায়ী একটা সম্পূর্ণ ডিম খেতে পারবে। তখন দিনে বাচ্চার প্রোটিনের চাহিদা হবে প্রায় ১৮ গ্রাম।

শিশুর যদি ডিমে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া না থাকে, তবে ডিম খাওয়ানো উচিত
ছবি: পেকজেলস ডটকম

ডিম কি খাওয়াতেই হবে

শিশুর যদি ডিমে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া না থাকে, তবে ডিম খাওয়ানো উচিত। কারণ, ডিমে প্রোটিনের পাশাপাশি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। ডিমে ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ডি, ই, বি ১২, আয়রনসহ কোলিনের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। এসব উপাদান শিশুর হাড়, দাঁত, ত্বক, স্নায়ু ও মস্তিষ্কের গঠনে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

  • মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল