মাড়ের মধ্যে ‘ভাইটামিন’ আছে
‘মাইরের মধ্যে ভাইটামিন আছে’—‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের বাকের ভাইয়ের বিখ্যাত সংলাপ।
মাইরের মধ্যে সত্যিই ‘ভাইটামিন’ আছে কি না, সেই গবেষণা কেউ করেনি। তবে ভাতের মাড়ে ভিটামিন নিশ্চয়ই আছে। আছে আরও নানা পুষ্টিগুণ।
ভাতের মাড়ের পুষ্টিগুণ
ভাতের মাড়ে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। ভাত রান্নার সময় চালের কিছু পুষ্টি পানিতে মিশে আস্তে আস্তে মাড়ে পরিণত হয়। এই মাড়ের মধ্যে আছে ভিটামিন বি। যেমন বি১, বি২, বি৬ এবং বি৯, যা দেহে শক্তি উৎপন্ন করে এবং কোষকে কার্যকর রাখতে অবদান রাখে।
শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখতে মানবদেহের প্রয়োজন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস। সব কটি উপাদান আছে ভাতের মাড়ে, তা ছাড়া ভাতের মাড়ে ফেরুলিক অ্যাসিড ও অ্যালানটোইনের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে, যা কোষকে ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস’ থেকে রক্ষা করে। ত্বকও ভালো রাখে।
মাড় যেভাবে ওজন কমায়
ভাতের মাড়ে ক্যালরি তুলনামূলক কম থাকে। পাশাপাশি এর পুষ্টিগুণও বেশি। তাই মাড় খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ না হলেও প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের অভাব দূর হয়।
হজমের সমস্যা দূর করে
ভাতের মাড়ে থাকা রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ ও অলিগোস্যাকারাইড নামের দুটি দ্রবীভূত ফাইবার হজমে সহায়তা করে। এই ফাইবারগুলো অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রকে ভালো রাখে। এ ছাড়া হজমে সহায়তা করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পানিশূন্যতা দূর করে
ওজন কমানোর জন্য এবং ভালো স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ‘হাইড্রেশন’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাইড্রেশন মানে হলো শরীরে যথেষ্ট পানি বজায় রাখা।
অনেক সময় ক্ষুধার্ত না হলেও আমরা নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে করি। এটা হাইড্রেশনের মাত্রা কমের কারণে হতে পারে। ভাতের মাড় হাইড্রেশনের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে অপ্রয়োজনীয় নাশতা খাওয়া লাগে না এবং এতে ওজন কমে।
বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ে থাকা ইনোসিটল মানবদেহের বিপাক প্রক্রিয়া বা মেটাবলিজম এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে।
ভালো ইনসুলিন সংবেদনশীলতা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, কমায় ওজন বাড়ার ঝুঁকি।
কীভাবে ভাতের মাড় ব্যবহার করা যায়
ভাতের মাড় খাওয়া: ভাত রান্নার পর পানি ছেঁকে ঠান্ডা করুন। একটি লেবু বা দারুচিনির টুকরা দিয়ে খেতে পারেন। খাবারের আগে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে ক্ষুধা কম লাগবে, ক্যালরিও কম খাওয়া হবে।
কোমল পানীয়ের বিকল্প: আমরা অনেক সময় কোমল পানীয় খাই। এগুলোয় প্রচুর চিনি ও উচ্চ ক্যালরি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলো বর্জন করে ভাতের মাড় খেতে পারেন। এতে হালকা গন্ধ থাকায় এটি স্মুদি বা ভেষজ চায়ে ব্যবহার করা যেতে।
স্টক হিসেবে খেতে পারেন: স্যুপ, স্ট্যু বা পরিজ রান্নার সময় তরল হিসেবে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। এটি খাবারে সূক্ষ্ম গন্ধ ও পুষ্টি যোগ করে।
রাইস স্যুপ: ভাতের মাড় স্যুপ হিসেবেও খেতে পারেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া