থাইরয়েড গ্রন্থির নিঃসরণ বেড়ে গেলে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে। এ পরিস্থিতিকে বলা হয় থাইরোটক্সিকোসিস। গ্রেভস রোগ, থাইরয়েডের নডিউল, থাইরয়েডের প্রদাহ ইত্যাদি কারণে এটি হতে পারে। এ রোগ সাধারণত নারীদের বেশি হয়।
উপসর্গ
থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন ও ট্রাই-আয়োডো থায়রোনিন নামক হরমোন নিঃসরণ হয়। কোনো কারণে এসব হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে নানা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। যেমন ওজন হ্রাস, অতিরিক্ত ঘাম, অতিরিক্ত গরম লাগা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
অস্থিরতা, খিটখিটে মেজাজ, হাতের কাঁপুনি।
দ্রুত নাড়িস্পন্দন এমনকি এলোমেলো নাড়িস্পন্দন (এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন) হতে পারে। এ থেকে হৃৎপিণ্ড বিকল হয়ে যেতে পারে।
হার্টের রোগ থাকলে থাইরোটক্সিকোসিস সেটিকে আরও উসকে দেয়। সামান্য হাঁটলেই হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের প্রবাহ কমে আসে।
নারীদের মাসিক অনিয়মিত হয়; এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
কখনো কখনো শ্বাসকষ্টের অনুভূতি হতে পারে।
মাংসপেশির ক্ষয় বেড়ে যায়, সক্ষমতা কমে যায়। দ্রুত হাড় ক্ষয় হয়।
চোখের ওপরে থাইরয়েড হরমোন বিরাট প্রভাব ফেলে। অক্ষিগোলক বড় হয়ে যায়। খসখসে অনুভূতি হয়। চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে। চোখের ওপরের পাতা ওপরের দিকে টেনে ওঠার কারণে চোখের সাদা অংশ দেখা যায়।
যেভাবে নির্ণয়
রক্ত পরীক্ষায় থাইরয়েডের হরমোন বেশি পাওয়া গেলে জানা দরকার কেন এমনটি হচ্ছে। কারণভেদে চিকিৎসা ভিন্ন হতে পারে। কারণ নির্ণয় করা খুবই জরুরি।
প্রয়োজন হয় বাড়তি কিছু পরীক্ষারও। এগুলোর মধ্যে আছে থাইরয়েডের স্ক্যান, রেডিও আয়োডিন আপটেক, অ্যান্টিবডি টেস্ট ইত্যাদি।
চিকিৎসা
তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে। ওষুধ, শল্য ও রেডিও আয়োডিন চিকিৎসা।
রোগীর বয়স, লিঙ্গ, রোগের কারণ ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে চিকিৎসার ধরন।
ক্ষেত্রবিশেষে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হয়। বারবার ফলোআপের দরকার হয়।
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ,মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা