ঘি খাওয়ার উপকারিতা জানেন কি

আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ঘিকে বলা হয় সুপার ফুডছবি: পেক্সেলস

আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ঘিকে বলা হয় সুপার ফুড। গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে বা খালি খাওয়া যেতে পারে। অনেক তারকা তো কালো কফির সঙ্গেও মিলিয়ে খান।

হজমশক্তি বাড়ায়

ঘি খেলে হজমের এনজাইমের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে। পাশাপাশি ঘি পাকস্থলীর অ্যাসিডের উৎপাদনকে বাড়িয়ে দেয়। খাদ্যকে ভাঙতে ও পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে ঘি। বাড়ায় হজমশক্তি।

শক্তি জোগায়

ঘি মিডিয়াম চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড (এমসিএফএ) সমৃদ্ধ, শক্তির জন্য শরীরে দ্রুত বিপাক হয়। ঘি দিয়ে দিন শুরু করলে শরীরে প্রচুর শক্তি উৎপাদন হয়, যা আপনাকে আরও সতর্ক ও মনোযোগী করে তোলে।

ঘিয়ে আছে ওজন নিয়ন্ত্রক সিএলএ

ঘিয়ে আছে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড (সিএলএ)। গবেষণায় দেখা গেছে, সিএলএ স্থূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে। সিএলএ ওজন কমাতে এবং শরীরের চর্বি কমায়। গুড ফ্যাটের ঘনত্ব খাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে আনে। ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

মস্তিষ্কের কোষগুলোর বিকাশ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গুড ফ্যাটের প্রয়োজন হয়। ঘিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় প্রয়োজনীয় ফ্যাট, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ঘিয়ে থাকা আমিষ, মস্তিষ্কে থাকা নিউরোট্রান্সমিটারকে কাজ করতে সহায়তা করে। এতে করে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি বাড়তে থাকে। পাশাপাশি এতে থাকা ওমেগা-৬, ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর ও মস্তিষ্ককে চাঙা রাখে। ঘি দিয়ে দিন শুরু করলে জ্ঞানক্রিয়া তৎপর হয় এবং মানসিক স্বচ্ছতা বাড়ে।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করে

ঘিতে রয়েছে বিউটারিক অ্যাসিড। এটি খাবার হজম সহজ করে। প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। যার ফলে ইনফেকশন ও রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

শরীর ভালো রাখে

ঘি খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়ে যায়।

ঘি ভিটামিন কে–এর খুব ভালো উৎস
ছবি: নকশা

হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে

হরমোন উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য গুড ফ্যাট অপরিহার্য। খালি পেটে ঘি খেলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেমন চুল পড়ে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বিষণ্নতা, বন্ধ্যত্বসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খালি পেটে ঘি খাওয়া যেতে পারে।

ত্বক ভালো রাখে

ঘিয়ে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। সেই সঙ্গে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। তাই ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ঘি বর্ণকে উজ্জ্বল করে। সকালে ঘি দিয়ে দিন শুরু করতে পারেন, দেখবেন বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলো দূর হয়ে যাচ্ছে।

মেটাবলিজম উন্নত করে

ঘিয়ে থাকা মিডিয়াম চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড মেটাবলিজম বা বিপাক উন্নত করে এবং চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। মেটাবলিজম হলো সুপারহিরোর মতো, শরীরের সবকিছুর ভারসাম্য রক্ষা করে। অর্থাৎ মেটাবলিজম হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ক্যালরি বার্ন করে খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। মেটাবলিজম ভালো থাকলে ওজন বাড়ে না।

জয়েন্টের ব্যথা কমে

ঘি ভিটামিন কে–এর খুব ভালো উৎস। যা ক্যালসিয়াম শোষণ করে। ঘিতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ফলে আর্থ্রাইটিস ও জয়েন্টের ব্যথা কমে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

ঘি পাচনতন্ত্রের জন্য একটি প্রাকৃতিক লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে, মল নরম করতেও সহায়তা করে। খালি পেটে ঘি খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

তবে একসঙ্গে অনেকখানি ঘি খাবেন না। এক চামচ ঘি–ই যথেষ্ট। প্রয়োজনে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। আরেকটি বিষয়, ভালো মানের ঘি বাছাই করতে চেষ্টা করুন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ওয়েবএমডি