স্মারকে স্বাধীনতা
বিশ্ব মানচিত্রের একটি দেশ। বাংলাদেশ। একটি চাবির রিঙে বাংলাদেশ! হাতের কবজিতে রিস্টব্যান্ড, বাংলাদেশ সেখানেও। লাল-সবুজে মোড়ানো পোশাকে তো বাংলাদেশকেই ধারণ করা। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে এমন অনেক জিনিসেই দেখা মিলছে বাংলাদেশের, আমাদের স্বাধীনতার চেতনার। অন্দরে ব্যবহৃত উপকরণ থেকে ফ্যাশন অনুষঙ্গ, অনেক কিছুতেই থাকছে বাংলাদেশের ছোঁয়া। ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোর ডিজাইনার তাহসিনা শাহিন বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে অনেকেই প্রিয়জনকে কিছু উপহার দিতে চায়। কেউ আবার বাসায় ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন স্মারক কিনে থাকে। নানা ধরনের মগের ওপরে লেখা জনপ্রিয় কবিতার কয়েকটি লাইন, পতাকার নকশা, মানচিত্র, পর্দা, কুশন কভার, শোপিসসহ নানা ধরনের জিনিস পাওয়া যায় দোকানে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের একটা অ্যালবাম বের করেছিলাম। সেটির বিভিন্ন বিষয় এবার আনা হয়েছে মগের নকশায়।’
স্বাধীনতা দিবস এলেই লাল-সবুজের স্বাধীনতার ছোঁয়া লাগে পোশাকপরিচ্ছদে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এবারও লাল-সবুজ তুলে এনেছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্ট বা কামিজে। অনেক পোশাকে ভিন্ন রং আর নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশ। হাতের ব্যাগ বা মাথার ব্যান্ডেনা সেখানেও আছে স্বাধীনতা দিবসের ছোঁয়া। লম্বা ঝুলের ব্যাগ, সবুজ কাপড়ে তৈরি ছোট্ট পার্স, শিশুদের স্কুল ব্যাগ, খাবার নিয়ে অফিসে যাওয়ার ব্যাগটাও এদিন বদলে নিতে পারেন লাল-সবুজে। রুমালে সেলাই করা নকশায় সবুজ জমিনে লাল রং। খাবার টেবিল বা পড়ার টেবিলের ম্যাট সেখানেও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ধরনের নকশা চোখ জুড়াবে। পাটি বা কাঠের চিক দিয়ে তৈরি রানারেও বাংলাদেশের লাল বা সবুজ রং। লাল টেবিল ল্যাম্পে সবুজ পাতার নকশা, লম্বা ডাঁটার মাথায় সবুজ পাতা ঘিরে টকটকে লালের রং দিয়ে তৈরি নানান রকম ফুল। চমত্কার সব নকশার ওয়াল ম্যাট, হরেক রকম শোপিস, পুতুল, হাতি, বইঠা হাতে মাঝিসহ পাটের কারুকাজে তৈরি নৌকা যেন এক্ষুনি নেমে যাবে পানিতে। কুলা, ডালা, চালুনি, মাছ ধরার খালুই, ঢেঁকির সমন্বয়ে তৈরি গারলেন্ড যা বসার ঘরের দরজা কিংবা জানালায় আনবে দেশীয় সংস্কৃতির ছাপ স্বাধীনতা লাল-সবুজে তৈরি নানান আকার ও আকৃতির ফলের ঝুড়ি।
লাল বা সবুজ রঙে তৈরি চাবির রিং আছে বিভিন্ন দোকানে। অনেক চাবির রিং বাংলাদেশের মানচিত্রে লাল-সবুজ রং দিয়ে ভাগ করা হয়েছে বিভাগ অনুসারে। দেশীয় নকশার প্রাধান্যে ওয়াল ম্যাট, খাবার টেবিল, বসার টুল ছাড়াও আছে নোটবুক, ফটোফ্রেম ইত্যাদি।
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে লেখা কবিতার পঙ্ক্তি সংবলিত মগ, ইংরেজি ও বাংলায় লেখা বাংলাদেশ দিয়ে নানা ধরনের ক্যালিগ্রাফি, পটুয়া কামরুল হাসানের সেই বিখ্যাত কার্টুনচিত্র এই জানোয়ারকে হত্যা করতে হবে ইত্যাদি নিয়ে তৈরি মগ পাওয়া যায় কোনো কোনো দোকানে।
অনেক দোকানে দেখা মিলবে মাথায় বাঁধা ব্যান্ডেনার। সেখানেও পতাকার রং, দেশের কথা, কবিতার লাইন বা ছবি থেকে বেছে নিতে পারবেন পছন্দমতো। নিউমার্কেটের ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে লাল-সবুজে তৈরি হাতের ব্রেসলেট ও রিস্টব্যান্ড। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উপহার দিতে চাইলে কাঁটাবন থেকে নিজের পছন্দমতো ছবি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন মগ, ক্রেস্ট বা স্মারক।
দরদাম
৫০ টাকায় চাবির রিং আর ২০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায় কেনা যাবে মগ। ৪০ থেকে ২৫০ টাকায় ব্যান্ডেনা পাওয়া যাবে। বিশেষ সংগ্রহের শাড়ি কিনতে পারবেন ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকায়, শোপিস ১০০০ টাকার মধ্যে, নোটবুক বা ফটোফ্রেম হলে লাগবে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা। স্মারক, ক্রেস্ট বা মগ ইচ্ছামতো তৈরি করে নিতে চাইলে খরচ হবে ২৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকার মতো। রুমাল ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, পতাকার দাম নির্ভর করবে আকারের ওপর ১০০ থেকে ১০০০ টাকার মতো। কুশন কভার ৩০০ টাকায় আর টেবিল ম্যাট সেটসহ এক থেকে দেড় হাজার টাকা। ফলের ঝুড়ি পাওয়া যাবে ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
যেখানে পাবেন
দেশিদশ, বিশ্বরঙ বাই বিপ্লব সাহা, আজিজ সুপার মার্কেট, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, সোর্স, কাঁটাবনের বিভিন্ন দোকান, সাদাকালো, যাত্রা, গারলেন্ড, যমুনা ফিউচার পার্ক, ধানমন্ডির বিভিন্ন সুপারশপে।