ভ্যাপসা গরম, প্রচণ্ড রোদ। যেভাবেই বোঝানো হোক না কেন, অনুভূতি কিন্তু একটাই—গরম। প্রকৃতি মাঝেমধ্যে বৃষ্টির ছোঁয়া দিচ্ছে। তারপরও কাটেনি গরমের প্রভাব। এ সময়ে পোশাকটা কেমন হবে? সাজটা কেমন হলে আরাম পাবেন? কোথায় কখন কী ধরনের পোশাক পরবেন? প্রশ্নগুলো কিছুটা হলেও ভাবায়। হালকা রং, পাতলা কাপড়, আরামদায়ক কাট। গরমে একটু আরাম পেতে হলে পোশাকে এই বিষয়গুলো থাকতে হবে।
কাপড় নির্বাচন
দেশীয় কিংবা পাশ্চাত্য-পোশাকটার কাট-ছাঁট যে দেশেরই হোক না কেন, কাপড় হতে হবে পাতলা। ফ্যাশনের সঙ্গে সঙ্গে যেন আরামটাও পুরোপুরি পাওয়া যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শিফন, সুতি, ক্রেপ, জর্জেট, সিল্ক, লিনেন, ভালো মানের নেটের তৈরি পোশাকগুলোতে আরাম পাওয়া যাবে বলে জানান ডিজাইনাররা। সুতির কাপড় সব থেকে আরামের হলেও সেটি সব জায়গার জন্য মানানসই নয়। শিফনের কাপড় এ ক্ষেত্রে হতে পরে আদর্শ বাছাই। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ সবকিছুতেই আভিজাত্য নিয়ে আসবে। মানিয়ে যাবে দিনে ও রাতে দুই সময়েই। ডিজাইনার মারিয়া সুলতানা বলেন, ‘শিফন খুব আকর্ষণীয় কাপড়। অনেক জমকালোভাবে ব্যবহার করা যায়। শিফন শাড়ির সঙ্গে অনেক ধরনের ব্লাউজই ব্যবহার করা যায়। নরম অথচ একটা চকচকে ভাব চলে আসে সাজে।’
আরাম পাবেন যেভাবে
হুটহাট বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও শিফন শুকিয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। তবে দৈনন্দিন দৌড়ঝাঁপের জন্য শিফন নয় বলে জানান মারিয়া সুলতানা। কারণ, এটি খুব নাজুক ধরনের কাপড়। এ জন্য জর্জেটের কাপড় পরতে পারেন। তবে পাতলা বলে জর্জেট অনেকেই পরতে আরামবোধ করেন না। এ ক্ষেত্রে শিফন বা জর্জেটের কামিজ বানালে ভেতরের শেমিজটা পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। শিফন শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের দৈর্ঘ্য একটু বাড়িয়ে নিতে পারেন।
সব রকম নকশা আসলে চাইলেও শিফন কাপড়ের ওপর করা যায় না। মেশিন এমব্রয়ডারি করে হালকা চুমকির কাজ দেওয়া যায়। শিফনে যদি জমকালো ভাব আনতে চান, তাহলে ব্লাউজে ভারী কাজ করিয়ে নিতে পারেন। দাওয়াতে পরতে চান এমন শিফনের শাড়িতে আধা ইঞ্চি বা এক ইঞ্চি চিকন পাড় ও হালকা পাথর বসিয়ে নিতে পারেন।
পাতলা সাটিনের শাড়িও গরমের জন্য আরামদায়ক। কাজের ক্ষেত্রে সুতার কাজকে প্রাধান্য দিলে পোশাকটি ভারী বোধ হবে না। দিনের বেলার জন্য পিচ, লেবু, সাদা, প্যাস্টেল রংগুলো বেছে নিন। তবে অনেকেই উজ্জ্বলতার ছোঁয়া রাখতে চান পোশাকে।
ডিজাইনার মায়া রহমান বলেন, ‘এখনকার আবহাওয়ায় জর্জেটের শাড়ি ভালো। ভিজলে শুকিয়ে যাবে। আবার কুঁচকে যাবে না। ক্রেপ কাপড়ের তৈরি কামিজ পরতে পারেন। ঠান্ডা অনুভূতি দেবে। এ ছাড়া পাতলা সাটিনের শাড়িও গরমের জন্য আরামদায়ক। কাজের ক্ষেত্রে সুতার কাজকে প্রাধান্য দিলে পোশাকটি ভারী বোধ হবে না।’ দিনের বেলার জন্য পিচ, লেবু, সাদা, প্যাস্টেল রংগুলো বেছে নিন। তবে অনেকেই উজ্জ্বলতার ছোঁয়া রাখতে চান পোশাকে। সে ক্ষেত্রে পোশাকের মূল রং হালকা রেখে নকশাগুলোকে একটু উজ্জ্বল রঙ দিতে পারেন। চাইলে নেটের ওপর অ্যাপ্লিকে করতে পারেন, তাতে ভালো লাগবে।
ছাপা কাপড়ও বেছে নিতে পারেন। গরমের পোশাকে ছাপা নকশাই সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেয় বলে মনে করেন ডিজাইনার রামিম রাজ। শিফন, ক্রেপ, সিল্ক, লিনেন সব ধরনের কাপড়ের ওপরই ফুল, জ্যামিতিক ছাপা নকশাসহ অনেক ধরনের নকশাই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। কাটটা একটু ভিন্ন ধরনের করতে পারেন।
লম্বা ম্যাক্সি পোশাক, জাম্পস্যুট, লম্বা শার্টগুলোও বৈচিত্র্য আনবে। কুর্তা করলে সেখানে বেল্ট রাখতে পারেন। নকশা ও রঙ হালকা হলেও কাটের কারণে দেখতে ভালো লাগবে। রামিম রাজ বলেন, ‘জায়গা বুঝে কাপড় নির্বাচন করতে হবে। খুব বেশি চলাফেরা করতে হলে সুতির তৈরি পোশাক না পরাই ভালো। তাড়াতাড়ি ভাঁজ পড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে লিনেন বেছে নিতে পারেন। দিনের বেলায় হালকা হলুদ, হালকা গোলাপি, বিভিন্ন শেডের প্যাস্টেল রংগুলো দেখতে ভালো লাগবে।’