এমিলির চরিত্রে অভিনয় করা লিলি কলিন্স সম্পর্কে কতটা জানেন?
বাবা বিশ্বখ্যাত গায়ক, মা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। আর মেয়ে কিনা বিনোদনজগতের বাইরে থাকতে চান! টুকটাক গান গাইলেও নিজে গায়িকা হতে চাননি লিলি কলিন্স, অভিনয় তো আরও না। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সাংবাদিক হতে চেয়েছেন। নিজের সেই পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিজমে। অথচ তিনিই এখন জনপ্রিয় নায়িকা। নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘এমিলি ইন প্যারিস’–এ নামভূমিকায় অভিনয় করে দুনিয়াজুড়েই পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। আগেও একাধিক ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই ব্রিটিশ–আমেরিকান অভিনেত্রী। চলুন, লিলি কলিন্সের আরও কিছু তথ্য জানা যাক—
৩৫ বছর বয়সী অভিনেত্রী লিলি কলিন্সের জন্ম ১৯৮৯ সালের ১৮ মার্চ ইংল্যান্ডের গিল্ডফোর্ডে। তাঁর বাবা বিখ্যাত ব্রিটিশ রক গায়ক ফিল কলিন্স, মা মার্কিন অভিনেত্রী জিল টাভেলমান।
মাত্র দুই বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন লিলি। বিবিসির টিভিসিরিজ ‘গ্রোয়িং পেইনস’–এ নব্বইয়ের দশকে একটি ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেন লিলি কলিন্স।
বাবা–মায়ের বিচ্ছেদের কারণে ৫ বছর বয়সে ইংল্যান্ড ছেড়ে মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে পাড়ি জমান লিলি। সেখানেই বেড়ে উঠেছেন এই অভিনেত্রী।
সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছা থেকেই পরে বিভিন্ন ম্যাগাজিনে লেখালেখি শুরু করেন। বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘টিন ভোগ’, ‘সেভেনটিন’, ‘এলি গার্লে’ তাঁর অনেক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৮ সালে নিকেলোডিওন চ্যানেলের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করেন লিলি।
হঠাৎ করেই ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘দ্য ব্লাইন্ড সাইডে’ অভিনয় করেন লিলি কলিন্স। যেখানে তিনি এক বিখ্যাত ফুটবলারের বোনের চরিত্রে অভিনয় করেন। এই সিনেমা বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখে।
লিলি কলিন্সের পরের সিনেমা ‘প্রিস্ট’ মুক্তি পায় ২০১১ সালে। সিনেমাটি ভালো ব্যবসা না করলেও লিলির অভিনয় নজর কাড়ে। এরপর একই বছর ‘অ্যাবডাকশন’ সিনেমায় অভিনয় করেন লিলি।
তবে লিলি কলিন্স মূলধারার দর্শকদের নজর কাড়েন ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘মিরর মিরর’ সিনেমায় অভিনয় করে। যেখানে দর্শক প্রথমবার লিলির সুরেলা কণ্ঠের খোঁজ পান। মা ও বাবার দুটি ভিন্ন প্রতিভাই নিজের মধ্যে ধারণ করে এগিয়ে যেতে শুরু করেন লিলি। এই সিনেমায় লিলি ‘আই বিলিভ ইন লাভ’ গানে কণ্ঠ দেন।
এরপর একে একে ‘লাভ রোজি’, ‘রুলস ডোন্ট অ্যাপ্লাই’,‘ টু দ্য বোন’, ‘ওকজা’র মতো সিনেমায় অভিনয় করেন। ২০১৬ সালে লিলি ‘আনফিল্টারড: নো শেইম, নো রিগ্রেটস, জাস্ট মি’ নামের একটি বই লেখেন। বইতে লিলি তাঁর ইটিং ডিজঅর্ডার ও তারকা পরিবারে বেড়ে ওঠার মতো নানা ঘটনার খোলামেলা বর্ণনা করেছেন।
খুব ছোটবেলায় বাবা–মায়ের বিচ্ছেদের পর বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে মানসিকভাবে নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে এগিয়েছেন লিলি কলিন্স। তাই সচেতনভাবেই নিজের ব্যক্তিজীবনকে পাদপ্রদীপের আলোর বাইরে রাখতে চেষ্টা করেন লিলি।
২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন লেখক ও পরিচালক চার্লি ম্যাকডোয়েলকে বিয়ে করেন লিলি কলিন্স।
এর আগে ২০১৯ সালে এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে দুজন ঘোষণা দেন নিজেদের প্রেম বিষয়ে। পরের বছর বাগদান সাড়েন এই জুটি।
২০১৩ সালের সবচেয়ে ভয়ংকর সাইবার তারকা নির্বাচিত হয়েছিলেন লিলি কলিন্স। তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ম্যাকাফির বার্ষিক প্রতিবেদনে সেবার এই তথ্য জানা যায়। কেন তিনি সেবার ভয়ংকর তারকা হয়েছিলেন, সেটা অবশ্য ভক্তদের জন্য স্বস্তির কারণ হতে পারে।
সে বছর বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তায় থাকা তারকাদের মধ্যে লিলির নাম ছিল ওপরের দিকে। আর তাই সেই সুযোগ নিয়ে লিলির ছবির সঙ্গে ভাইরাস জুড়ে দেয় অপরাধীরা। যাতে ইন্টারনেটে কেউ তাঁকে খুঁজলেই সহজে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে পড়ে।