শেহতাজ মনিরা হাশেমের ঈদের আনন্দ বদলে গেছে কেন
শেহতাজ মনিরা হাশেমের ঈদের আনন্দ বদলে গেছে। মা-বাবাকে হারিয়ে স্বামী প্রীতম হাসানই এখন তাঁর সবচেয়ে আপনজন। নিজেদের জন্য আলাদা করে ঈদের কেনাকাটা না করলেও অন্যদের জন্য ঠিকই কেনেন এই অভিনেত্রী ও কন্ঠশিল্পী। শেহতাজের ঈদের খোঁজখবর জানাচ্ছেন বিপাশা রায়
‘বাবাকে হারিয়েছি কয়েক বছর হলো, আর মাকে ছাড়া এটা আমার দ্বিতীয় ঈদ। তাঁদের সঙ্গে কাটানো ঈদগুলো খুব মিস করি। নতুন জামা পরে সাজগোজ করে যখন বাবার সামনে দাঁড়াতাম, বলতেন, “আমার মেয়েটাকে কী সুন্দরই না লাগছে!” কথাগুলো মনে পড়লে এখন খুব খারাপ লাগে,’ বলছিলেন অভিনেত্রী শেহতাজ মনিরা হাশেম।
ঈদের দিন কীভাবে কাটাবেন, তা নিয়েই কথা হচ্ছিল। সে প্রসঙ্গেই বলছিলেন, ছোটবেলার আনন্দগুলো ছিল একরকম, বড়বেলায় এসে সম্পর্কগুলো যেমন, তেমনি ঈদের আনন্দও বদলে যায়।
সারা বছরই কাজের প্রয়োজনে প্রচুর কেনাকাটা করেন শেহতাজ। ঘুরতে গেলে সংগ্রহ করেন পোশাক। যে কারণে আলমারিতে অনেক নতুন পোশাক জমে থাকে। ঈদে তাই আর নতুন করে কেনাকাটার প্রয়োজন বোধ করেন না। সেখান থেকেই যেকোনো একটা পরে নেন। শেহতাজ বলছিলেন, দু–তিন বছর ধরেই এমনটা হয়ে আসছে। এবারও ব্যতিক্রম হবে না।
সাধারণত হালকা রঙের পোশাক পরতে ভালোবাসেন। পছন্দ করেন চিকেন কারি কাপড়। ঈদের দিন কোনো এক বেলায় কুর্তি পরবেন। কাপড়টা হবে সুতি। বর্তমানের ট্রেন্ড অনুযায়ী একটু ঢিলেঢালা ওভারসাইজ পোশাক পরতে ভালোবাসেন শেহতাজ। পছন্দ করেন ট্র্যাডিশনাল ছাঁট ও নকশা।
তবে এখন না করলে কী হবে, ছোটবেলায় মা–বাবার হাত ধরে ঈদের কেনাকাটা করতে যাওয়ার সেই দিনগুলো বেশ মিস করেন। শেহতাজ গল্প করেন, ‘জানেন, মা–বাবার সঙ্গে কাটানো সেই সাধারণ ঈদের মুহূর্তগুলোকে এখন মনে হয় বেশ দামি। ঘরের কাজে মা কখনোই খুব বেশি পারদর্শী ছিলেন না। বেশির ভাগ সময় তাঁর সহায়তাকারীরাই রান্নাঘর সামলাতেন। তবে ঈদের দিন নিজের হাতে আমাদের জন্য রাঁধতেন। চটপটি, সেমাই, আরও কত–কী! মায়ের হাতের চটপটির মতো মজার চটপটি আর কোথাও খাইনি।’ বোঝা গেল, মা–বাবাকে ঈদের দিনগুলোয় একটু বেশিই মিস করেন শেহতাজ।
বললেন, ‘এখন অন্যভাবে ঈদ উদ্যাপনের চেষ্টা করি।’ এ ক্ষেত্রে (স্বামী, গায়ক ও অভিনেতা) প্রীতম হাসানের সঙ্গে শেহতাজের ভাবনাটাও মিলে যায়, ‘আসলে আমরা যখনই মন চায় শপিং করতে পারি। পছন্দমতো জিনিস কিনি। তবে ভালো পোশাক পরার সামর্থ্য যাদের নেই, তাদের জন্য এই সময়টা আমরা কেনাকাটা করি।’
এ তালিকার আছেন শেহতাজের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী ও বাড়ির কাজে সহায়তাকারী মাহফুজা খালা। তাঁকে মায়ের মতো ভালোবাসেন, আগলে রাখেন এই নারী। তাঁদের জন্য কখনো দেশের বাইরে থেকে, কখনো দেশেরই কোনো নামকরা ব্র্যান্ড থেকে পোশাক কিনে থাকেন, জানালেন শেহতাজ।
‘আসলে বেশির ভাগ সময় আমরা ভাবি, এ ধরনের মানুষকে একটা যেমন–তেমন নতুন পোশাক কিনে দিলেই হলো। কিন্তু আমি ও প্রীতম যেমন নকশা ও মানের পোশাক পরি, তেমন পোশাকই ওনাদের জন্য কিনি। উপহার পেয়ে তাঁদের অনুভূতিটা যে কেমন হয়, না দেখলে বোঝানো যাবে না। আর এটাই আমার ও প্রীতমের কাছে ঈদের সবচেয়ে বড় আনন্দ।’