দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখর আর্কা ফ্যাশন উইকের তৃতীয় দিন
তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে চলছে আর্কা ফ্যাশন উইক ২০২৫। ১৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটি চলবে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
মিলেনিয়াল, জেন জি ও জেন আলফা—ফ্যাশনপ্রেমী নানা বয়সী মানুষের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে আর্কা ফ্যাশন উইক। গত দুই দিনের মতো ১৮ জানুয়ারিও জমজমাট ছিল আয়োজনের মার্কেটপ্লেস, ডিজাইন ল্যাব ও ফুড জোন। দিনব্যাপী চলেছে রিকশা পেইন্টিং, কাঁথা স্টিচ ইত্যাদি বিষয়ে মাস্টারক্লাস। এ ছাড়া আজও ছিল জমকালো ফ্যাশন শো।
আজকের ফ্যাশন শোর প্রথম স্লট ও দ্বিতীয় স্লটের প্রথম অংশ ছিল নতুন ফ্যাশন ডিজাইনারদের প্রতিভা ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্র। বিভিন্ন ফ্যাশন ইনস্টিটিউটে ফ্যাশন ডিজাইনে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তুলে ধরে তাদের ডিজাইন। এই শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারজয়ী বিজয়ী ফ্যাশন ডিজাইনার রোকাইয়া আহমেদ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাজ, পোর্টফোলিও ও সমাজের জন্য তাঁরা কী করতে চায়, এ সবকিছু বিবেচনা নিয়ে ৬৬ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১৯ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
নতুন ডিজাইনারদের পোশাকে দেখা গেছে টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান। সৃজনশীল নবাগত ডিজাইনাররা পশ্চিমা পোশাকে ব্যবহার করেছেন ডেনিম, লেদার, গামছা প্রিন্ট, কাপড়ের পুতুল, বেনারসি ও পাট।
দ্বিতীয় স্লটের শেষ অংশে নিজেদের পোশাক প্রদর্শন করেছে ডিজাইনার আদির ব্র্যান্ড গ্লি। আজ আরও পোশাক প্রদর্শন করবে জয়নব মাকসুদের ব্র্যান্ড আমিরা।
দর্শনার্থীদের মধ্যে থেকে আগ্রহীদের নিয়ে প্রথম দিন থেকেই মার্কেটপ্লেসের বাইরের ওয়াকওয়েতে করা হচ্ছে ফ্ল্যাশ রানওয়ে। চারটি থিমে ভাগ করা চার দিনের আর্কা ফ্যাশন উইকের তৃতীয় দিনের থিম ছিল ‘ফিউশন’। থিমের সঙ্গে মিল রেখে আজ দর্শনার্থীদের পোশাকে দেখা গেছে ফিউশনের ছোঁয়া। সাজে ফিউশন আনতে দর্শনার্থীর কেউ কেউ পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে পরেছে অ্যান্টিক, মাটি ও কাপড়ের গয়না। কেউ লুঙ্গির সঙ্গে পরেছে লেদার জ্যাকেট।
দর্শনার্থীদের শাড়ি পরার ধরনেও দেখা গিয়েছে ভিন্নতা। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গতানুগতিক ধারার বাইরে কেউ শাড়ি পরেছে কুঁচি ছাড়া পেঁচিয়ে, কেউ ব্লাউজের পরিবর্তে পরেছে শার্ট, টপ বা জ্যাকেট, কেউবা দেশি শাড়ির সঙ্গে পরেছে পশ্চিমা ধাঁচের গয়না। শাড়িতে কিছুটা ভিন্নতা যোগ করতে শাড়ির সঙ্গে লেদার, মেটাল, কড়িসহ বিভিন্ন ধরনের বেল্ট পরেছেন অনেকে। কয়েকজন পুরুষ দর্শনার্থীকে দেখা যায় প্যান্ট ও জ্যাকেটের সঙ্গে শাড়ি পরতে। এ ছাড়া মাথায় ব্যান্ডানা পরেছেন কেউ কেউ। দর্শনার্থীদের পোশাকে বোহেমিয়ানের দেখা মিলেছে আজ। সোশ্যাল মিডিয়ার ভোটের মাধ্যমে এই অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ঘোষণা করা হয় বিজয়ী।
বিকেল থেকেই জমজমাট হতে শুরু করেছে মার্কেটপ্লেস। এবারের মার্কেটপ্লেসে ক্রেতাদের আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল নতুন কারিগর ও দেশি ব্র্যান্ডগুলোর স্টল। মার্কেটপ্লেসের এক পাশে মিরপুরের বেনারসিপল্লি থেকে আসা তাঁতিরা বুনছিলেন বেনারসি। তাঁতিদের কাছ থেকে বেনারসি কিনেছেন সানজিদা শেখ। তিনি বলেন, চোখের সামনে এভাবে তাঁতে বোনা আগে দেখা হয়নি।
মার্কেটপ্লেসের ‘টোকো’ নামের স্টলে দেখা গেল ফ্যাশনেবল বিভিন্ন ক্যাপ ও মোজা। মার্কেটপ্লেসে হুডি ও শার্টের ওপর গ্রাফিতি করে ক্রেতাদের দেখাচ্ছিলেন ‘আঁকাবাঁকা’ স্টলের শিল্পী।
আজ দিন শেষে আছে জলের গানের পরিবেশনা।
এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে আছে প্রথম আলো ডটকম ও স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হালফ্যাশন।