সোনা ছাড়া অন্য গয়না পরতে পারছেন না?
সাধারণের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে এখন সোনার দাম। কিন্তু অনেকেই আছেন যাঁরা সোনা ছাড়া অন্য কোনো উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন না। অন্য উপকরণের গয়না পরলেই তাঁদের ত্বকে দেখা দেয় নানা সমস্যা। কিন্তু এই বাজারে হরহামেশা সোনার গয়না বানানো তো আর সম্ভব নয়। তাহলে কী করা যায়?
সে ক্ষেত্রে রুপার গয়না বেছে নেওয়া যায়। রুপার গয়নাও নিরাপদ। অর্থাৎ, রুপায় সাধারণত কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না। রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দিয়ে নিলে দেখায়ও সোনার মতো। এতে টাকারও সাশ্রয় হয়। চাইলে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যের অন্যান্য ধাতব গয়নাও ব্যবহার করা যায়। এর ওপর দিয়ে নিতে পারেন খাঁটি সোনার প্রলেপ। তবে কোন ধরনের সোনা দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে, সেটা অবশ্য আপনার বাজেট আর চাহিদার ওপর নির্ভর করে। ১৮ ক্যারেট সোনার চেয়ে ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপ স্বাভাবিকভাবেই বেশি উজ্জ্বল দেখাবে।
তবে উজ্জ্বলতার চেয়ে প্রলেপের মানটা ত্বকের নিরাপত্তার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দেশে আবার কেবল প্রলেপই নয়, গয়নার গোল্ড ফিলিং করানোরও সুযোগ থাকে। ধাতব উপকরণে প্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকলে প্রলেপ দেওয়ার কাজটা সোনা বা রুপা যা দিয়েই করা হোক না কেন, যত ক্যারেটের সোনাই ব্যবহার করা হোক না কেন, ত্বকের নিরাপত্তার জন্য প্রলেপের মান নিশ্চিত করাটা জরুরি, বলেন কনক দ্য জুয়েলারি প্যালেসের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার লায়লা খায়ের।
রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া গয়নার চেয়ে অন্যান্য ধাতব উপকরণের ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া গয়না বেশি টেকসই। এসব ধাতব উপকরণের ওপর রুপার প্রলেপ দিলেও ত্বকের জন্য নিরাপদ। তবে কানের দুল যে অংশের সাহায্যে কানে সেঁটে থাকে, সেই অংশে অবশ্য সোনা-রুপার প্রলেপ দিয়ে তেমন লাভ নেই। তাই সোনা বা রুপা ছাড়া অন্যান্য ধাতব উপকরণের কানের দুল পরতে চাইলে দুলের যে অংশ ত্বকের সংস্পর্শে থাকে, সেটা রুপা দিয়ে গড়ে নিতে পারেন।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ইসরাত খান বলেন, কোনো গয়না পরার পর ওই স্থানের ত্বক লালচে হয়ে গেলে, ফুলে গেলে বা চুলকানি হলে বুঝতে হবে, উপকরণটি আপনার ত্বকের জন্য নয়। ত্বকে এ ধরনের কোনো প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই গয়না খুলে ফেলতে হবে। সাবান দিয়ে জায়গাটা ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শও নিতে হবে। ভবিষ্যতে উপকরণটিকে ত্বকের সংস্পর্শে আনা যাবে না।
এসব উপকরণের বাইরেও কিন্তু গয়না হতে পারে। এই ধরুন একছড়া মুক্তার মালা কিংবা কাচের চুড়ি। কাপড়, সুতা, মাটিসহ কত কিছু দিয়েই তো গয়না গড়া যায়। তবে হ্যাঁ, মাটি বা কাপড়ের তৈরি হলেও কানের দুল যে অংশের সাহায্যে কানে ঝোলানো হয়, সেই অংশ ধাতব উপকরণের তৈরি হয়ে থাকে, যার কারণে কানের ত্বকে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। বুঝতেই পারছেন, এ ক্ষেত্রে গয়নাটা মাটি, কড়ি বা কাপড়ের তৈরি হলেও প্রতিক্রিয়ার জন্য এসব উপকরণ দায়ী নয়।