আর্কা ফ্যাশন উইকে ছিল বাহারি দেশি পণ্যের পসরা

পরিবেশবান্ধব উপকরণ নিয়ে কাজ করেন আফসানা ফেরদৌসী
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

শেষ হলো ‘আর্কা ফ্যাশন উইক ২০২৫’। আলোকি কনভেনশন সেন্টারে ১৬ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা জমজমাট এই আসরে এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘সবার জন্য ফ্যাশন’।

আয়োজন জুড়ে ছিল মার্কেটপ্লেস, মাস্টারক্লাস, ডিজাইন ল্যাব, ফ্যাশন শো, ফ্ল্যাশ রানওয়ে ও ফুড জোন। প্রতিবারই দেশীয় কারিগর ও নবাগত উদ্যোগকে তুলে ধরে আর্কা। তৃতীয় আসরের মার্কেটপ্লেস ঘুরে তেমনটাই দেখা গেল।

মার্কেটপ্লেসের প্রায় ৫০টি স্টলের মধ্যে দেশীয় পণ্যের স্টলগুলোয় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

ছোটদের পণ্য
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

প্রতিভা

‘প্রতিভা’র স্টলে দেখা গেল রিকশা পেইন্টের তৈজসপত্র ও অনুষঙ্গ। ছিল কুশিকাটার চাবির রিং আর ছোটদের জামাকাপড়। ‘ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’ নামের এনজিওর একটি প্রজেক্ট প্রতিভা।

প্রায় ৪৫ বছর ধরে কাজ করা রিকশা পেইন্টের শিল্পী রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বেই আঁকা হয়েছে পণ্যগুলো। রিকশা পেইন্টের পণ্যের লভ্যাংশ চলে যায় প্রতিভার প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোয়।

সেভেন ডেজ নোটস

আজকাল মানুষ কাগজ–কলমে না লিখে টাইপ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। টাইপ করার এই অভ্যাস থেকে কিছুটা বেরিয়ে মানুষকে আবার ডায়েরি লেখায় ফিরিয়ে আনতে চায় ‘সেভেন ডেজ নোটস’।

তাদের নোটবুকের মলাটে মিলল দেশের নানা বিভাগকেন্দ্রিক ইলাস্ট্রেশন, দেশের ঐতিহ্যবাহী যানবাহনের ছবি ইত্যাদি। এ ছাড়া নিজস্ব ডিজাইনের টোট ব্যাগও ছিল স্টলটিতে।

পোশাকে কাঁথা স্টিচের কাজ
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

তাশা

‘তাশা’র স্টলে ছিল হাতে তৈরি দেশি গয়না। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সুতা, কড়ি, রুদ্রাক্ষ, কাপড়, ঘুঙুর ইত্যাদি। পশ্চিমা পোশাকে দেশীয় ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলে তাশা।

কাপড়ের ধরন নয়, বরং পোশাকের ডিজাইনকে মাথায় রেখে কাজ করে ব্র্যান্ডটি। তাশার পোশাকে সাধারণত ব্যবহার করা হয় সুইস কটন। তাশার আরামদায়ক পোশাকে ব্যবহার করা হয় হাতের কাজ, পুঁতি, কড়ি, আয়না।

ঢাকা ভিনটেজ

একসময় গ্রামবাংলাজুড়েই ছিল কাঁথা তৈরির চল। অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করতেন নারীরা। ‘ঢাকা ভিনটেজ’ স্টলের প্রতিটি পোশাকেই ছিল কাঁথা স্টিচের কাজ। কাঁথা স্টিচের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ও তরুণদের সামনে তুলে ধরতেই তাদের এমন উদ্যোগ।

বিভিন্ন ধরনের হাফ ও ফুলশার্ট, কিমোনো, কোট ও জ্যাকেট ছিল ঢাকা ভিনটেজের স্টলে।

রিকশা পেইন্টের তৈজসপত্র ও অনুষঙ্গ
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

বেনারসিপল্লির স্টল

মার্কেটপ্লেসে ছিল মিরপুরের বেনারসিপল্লির তাঁতিদের স্টল। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বেনারসি বুনে দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁতিদের থেকে সরাসরি বেনারসি কিনতে পেরে খুশি ছিলেন ক্রেতারাও।

পেশায় তাঁতি মোহাম্মদ রফিক বললেন, তিনি তাঁত বুনছেন ছোটবেলা থেকেই। বেনারসিপল্লিতে তাঁদের ‘মাহমুদা শাড়ি হাউস’ নামের দোকানটির বয়স প্রায় ৪৫ বছর।

আফসানা ফেরদৌসী

পরিবেশবান্ধব উপকরণ নিয়ে কাজ করেন আফসানা ফেরদৌসী। সুতি, লিনেন, পাটসহ বিভিন্ন দেশি কাপড়ের তৈরি পোশাকের দেখা মিলল তাঁর স্টলে।

আফসানা ফেরদৌসী জানান, কোনো রকম প্লাস্টিক ব্যবহার করেন না তাঁরা এবং তাঁদের প্রায় ৮০ শতাংশ পোশাকই হাতে বোনা। এ ছাড়া নকশিকাঁথা ও কাঁথা স্টিচ নিয়েও কাজ করে ব্র্যান্ডটি।