রোজা আর গরমেও রঙিন বৈশাখ
চার–চারটি ঈদ আর দুটি বৈশাখ চলে গেছে মহামারির পেটে। মানুষ সেভাবে ঘর থেকে বের হতে পারেনি, ফলে উৎসব কেটেছে অনেকটাই রংহীন। ফ্যাশন ব্যবসায়ীদের বাজারও গেছে মন্দা। এবার মহামারি শিথিল হয়ে আসায় অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিকভাবে উদ্যাপন করবেন পয়লা বৈশাখ।
দেশের পোশাকের বাজারে উৎসবের বড় দুই উপলক্ষ বৈশাখ আর রোজার ঈদ। এবার সেই দুই উপলক্ষ এসেছে পিছু পিছু, ১৫ দিনের ব্যবধানে। তাই ফ্যাশন ব্যবসায়ীরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন। ঘর থেকে বের হলেই বোঝা যায়, ফ্যাশন ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফোটাবে এবারের ঈদ। কেননা পুরোনো মেজাজে ফিরছে সব উৎসব। আর দুই বছরের জমে থাকা কেনাকাটা মিলিয়ে এবার মানুষ পোশাক কিনছে দেদার।
বর্ষবরণের রং লাল–সাদা। এত দিন ধরে নারীরা সাদা জমিনে লাল পাড়ের শাড়িতে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে আসছেন। আর পুরুষেরা সাদা পাঞ্জাবি। এসব পোশাকে দেখা যায় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী মোটিফ আর কারুকার্য। পরনের পোশাকে থাকে বাঘের মুখ, মাটির পুতুল, প্যাঁচা, পালকি, ঘোমটা দেওয়া বউয়ের মুখ, আলপনাসহ আরও কত কী! তবে এবারে লাল–সাদার সঙ্গে দলবলে যোগ দিয়েছে আরও কিছু রং।
সেগুলোর ভেতর আছে কমলা, মেরুন, সাদা, অফ হোয়াইট, সবুজ। এমনকি নীল আর বেগুনিও যোগ দিয়েছে সেই দলে। বিশ্বরঙের এবারের কালেকশনেই আছে সেই ছাপ। মোটকথা, লাল–সাদা থেকে বেরিয়ে আসতে চলেছে এবারের বৈশাখ। গরমে ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতির পোশাক বেছে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
বৈশাখে পোশাক আর গয়নায় থাকতে পারে ফিউশন। একটু পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে তুলে নিতে পারেন মাটি, বাঁশ, কাঠ, কড়ি, ঝিনুক, ফিতা, লতা, কাপড়, বিভিন্ন ফলের বীজ, তালপাতা, হোগলাপাতা, গামছা, পাট, সুতা, কচুরিপানা—এসব দেশি উপকরণে তৈরি গয়না। আবার মহামারিকালে দেশি গয়নার ব্যবসাও দাঁড়িয়ে গেছে। ফেলনা জিনিসে সব নিরীক্ষাধর্মী দৃষ্টিনন্দন গয়নাও তৈরি হচ্ছে। সেগুলোও পরতে পারেন। সঙ্গে টিপ আর কাজল তো আছেই। ট্রেন্ডে আছে ‘মিনিমাল মেকআপ’। অল্প সাজে পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা লুক আনা কঠিন নয়।
এ বছর রোজা ও গরমের জন্য অনেকেই থাকবেন বাড়িতে। তবে গত দুই বছরের তুলনায় মানুষ বাইরে বের হবেন বেশি। বের হওয়ার সময় সঙ্গে মাস্ক নিতে ভুলবেন না। সে ম্যাচিং করে হোক, কি না করে!