>ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। একসময় ছিলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় উপস্থাপক। এবার ঢাকায় ঈদ করবেন তিনি। নিজের ফ্যাশন, খাওয়াদাওয়া ও বিনোদনের নানা কথা অকপটে বলেছেন পাঠকদের। লিখেছেন তৌহিদা শিরোপা
ফ্যাশন
আনিসুল হক নামটি নিতেই নিশ্চয় আপনি দেখতে পাচ্ছেন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা এক মানুষকে। তিনি পাজামা-পাঞ্জাবি পরেন; পরেন শার্ট, টি-শার্টও। সব সময় ক্যাজুয়াল পোশাকই তাঁর প্রিয়। যা তাঁকে মানায়, তা-ই বেছে নেন। এ ছাড়া নানা ধরনের ফ্যাশনেবল স্নিকার আছে তাঁর পছন্দের তালিকায়। তবে স্নিকার পরলেও মোজা পরেন না। হাঁটার সময় পরেন স্পোর্টস সু। পছন্দ করেন ছিমছাম থাকতে। আনিসুল হকের ব্র্যান্ড বা দামি পোশাকের প্রতি খুব একটা আকর্ষণ নেই। কিন্তু ব্র্যান্ডের পোশাক যদি কেনেন, সে ক্ষেত্রে স্পেনের মাসিমো দুত্তি ও ইংল্যান্ডের মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার তাঁর প্রিয় দোকান—এসব তথ্য যখন জানালেন, তখনই বললেন, ‘মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের প্যান্ট কেনা হয়। ওখানকার প্যান্টগুলো ফিটিং হয় ভালো। কিন্তু আমি মনে করি, দামি ব্র্যান্ডের পোশাক পরলেই ভ্যালু ফর মানি হয় না।’—আনিসুল হকের স্পষ্ট কথা।
কাপড় ধরে দেখে যেটা ভালো লাগে সেটাই কেনেন। নিজের পোশাক কারখানা থেকে বানিয়ে নেন অনেক পাঞ্জাবি। ফরমাল অনুষ্ঠান না থাকলে সাধারণত স্যুট পরেন না। আর বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে স্যুট পরলেও টাই পরা একদমই না-পছন্দ তাঁর।
কোন পোশাক সবচেয়ে বেশি পরা হয়? ‘টি-শার্ট, পোলো শার্ট।’—ঢাকা উত্তরের মেয়র দিলেন এককথায় উত্তর।
কখনো আবার একই রকমের অনেকগুলো পোশাক কেনেন আনিসুল হক। গাঢ় নেভি ব্লু, ঘিয়া ও কালো রঙের পোশাক বেশি প্রিয়। ড্রাক্কার নয়ের, মাইকেল কোর সুগন্ধি ব্যবহার করেন সব সময়। হাতে থাকে সুইডিশ ঘড়ি। এভাবে ক্যাজুয়াল পোশাকেই ফুটে ওঠে মেয়র সাহেবের ‘স্মার্ট ব্যক্তিত্ব’।
খাওয়াদাওয়া
খাওয়ার ব্যাপারে তিনি একেবারে ভেতো বাঙালি। না, পুরোপুরি ঠিক হলো না কথাটা, বলতে হবে আনিসুল হক হলেন ডাল-ভাতের বাঙালি। কিন্তু নতুন নতুন খাবারের স্বাদ পছন্দ করেন। ক্রিসপি ফ্রায়েড চিকেন তাঁর প্রিয়। এখানে জানিয়ে রাখি, আনিসুল হক যেমন চা পান করেন না, তেমনি সিগারেটও খান না। কেবল সকালে ও রাতে খাওয়ার পর দুই বেলা পান করেন কফি।
বিনোদন
ঘুম থেকে ওঠেন সকাল সাতটা সাড়ে সাতটায়। এরপর কিছুক্ষণ ব্যায়াম। তারপর কাজে বেরিয়ে গাড়িতে বসে গান শোনা—বিনোদনের কথা জানতে চাইলে তিনি নিজেই দিলেন এসব তথ্য। বললেন, ‘সব ধরনের গান আমার ভালো লাগে। তবে বেশি প্রিয় পুরোনো দিনের বাংলা গান।’
পছন্দ করেন ভারতীয় সিনেমা দেখতে। আর ভালোবাসেন ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরতে। কিন্তু শুধু ঘোরার জন্য ঘোরা কখনোই হয় না তাঁর, ঘোরা হয় কাজের জন্য। তখন কখনো-বা সঙ্গে যায় পরিবার। কথায় কথায় নিজের মনের একটা ইচ্ছা প্রকাশ করলেন আনিসুল হক, ‘আমার একটা ব্যক্তিগত সফরে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কোনো কাজ থাকবে না, শুধু ঘুরব। পরিবার নিয়ে সেভাবে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তিন ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কেবলই বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কোথাও যেতে চাই।’ আরও একটা স্বপ্ন আছে তাঁর মনে—দুই বছরের মধ্যে ছোট মেয়ে তানিশাকে নিয়ে ভারতে ঘুরতে যেতে চান। তানিশার সঙ্গেই কাটে তাঁর সারা দিনের সবচেয়ে সেরা সময়। রাতের বেলা মেয়ে তানিশা যখন আনিসুল হকের সঙ্গে গল্প করে, সে সময়টি যে এত মধুর! কর্মব্যস্ত মানুষটির সারা দিনের ক্লান্তি তখন এক মুহূর্তে হাওয়া! বাবা আনিসুল হকের কাছে তানিশা একটা হাসির ফোয়ারা।
মেয়রের সঙ্গে কথাবার্তা যখন শেষের পথে, তাঁর কাছে আমাদের শেষ প্রশ্ন ছিল, কবে আবার তাঁকে উপস্থাপক হিসেবে পাব? হেসে জবাব দিলেন, ‘বড় কোনো ধারাবাহিক অনুষ্ঠান আর করতে চাই না। প্রায়ই ভয়ে থাকি, কী বলতে কী বলে ফেলি।’