ব্যাগবৃত্তান্ত

ছবি: এমআইবি স্পিরিট

ব্যাগ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি ফ্যাশন অনুষঙ্গ।
টাকাপয়সা থেকে শুরু করে টুকটাক প্রসাধনী, নোটবুক, কলম, স্যানিটাইজারসহ অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করার জন্য আমরা সাধারণত কোনো না কোনো ধরনের ব্যাগের দ্বারস্থ হয়েই থাকি।

ছবি: এমআইবি স্পিরিট

এগুলো নিত্যব্যবহার্য জিনিস, তাই ফ্যাশনের অনুষঙ্গও হয়ে উঠেছে। বাজারে ছেলে বা মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা ব্যাগ যেমন রয়েছে, তেমনি উভয়ই ব্যবহার করতে পারবে, এমন সব ইউনিসেক্স ব্যাগও আছে। ফ্যাশনেবল এসব ব্যাগ দ্রুত জনপ্রিয়তা অজর্ন করছে তরুণ প্রজন্মের কাছে। বর্তমানে অনলাইনে ভিন্নধর্মী ও ফ্যাশনেবল ব্যাগ বিক্রি করছে, এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচয় হওয়া যাক।

এমআইবি স্পিরিট

ছবি: এমআইবি স্পিরিট

বাংলাদেশে বিশ্বমানের ব্যাগ তৈরিতে বিশ্বাসী একটি প্রতিষ্ঠান হলো এমআইবি স্পিরিট। এমআইবি, অর্থাৎ মেড ইন বাংলাদেশ। খালেদ মাহমুদ ও কাজী মনিরুল কবিরের এই প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে। সাধারণ ব্যাকপ্যাক থেকে শুরু করে ট্রাভেলব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ ইত্যাদি প্রায় সব ধরনের ব্যাগই তৈরি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এসব ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহত হয় শিল্পকারখানা থেকে আসা বিভিন্ন ওয়েস্ট ম্যাটেরিয়াল। এ জন্য বলা যেতে পারে, এমআইবি পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণে ব্যাগ তৈরি করছে।

খালেদ মাহমুদ ও কাজী মনিরুল কবির
ছবি: এমআইবি স্পিরিট

দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের জন্য এ ব্যাগগুলো খুবই উপযোগী। সেই সঙ্গে ব্যাগগুলোর কনটেম্পোরারি ডিজাইন এগুলোকে অনেক আকর্ষণীয় করে তোলে। টিনেজার থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণ-তরুণী কিংবা চাকরিজীবী যে কেউই অনায়েসে ব্যাগগুলো ব্যবহার করতে পারেন। ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে তাদের ব্যাগগুলো। বাংলাদেশের তৈরি এই ব্যাগগুলোকে তারা বিশ্বের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে দিতে চান। এর মাধ্যমে তারা দেশে–বিদেশে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ কথাটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে চান।

ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি

ছবি: ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি

‘Clumsy Crafter BD’ নামেই ফেসবুক পেজ। শুরু ২০১৫ সালে। এর স্বত্বাধিকারী সুমাইয়া নওশীন ও মোহাম্মদ আলীনূর রহমান সিদ্দীক। তাঁদের পেজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তাঁরা প্রধানত টোটে ব্যাগের সঙ্গে ক্রসবডি স্ট্র্যাপস ব্যবহার করেন। ব্যাগের সঙ্গে মানানসই এসব স্ট্র্যাপ তথা কাঁধে ঝোলাবার ফিতায়ও রয়েছে রঙ ও স্টাইলের ভিন্নতা। সেই সঙ্গে একজন গ্রাহক চাইলেই তাঁদের কাছে নিজের পছন্দের ডিজাইনে ব্যাগ তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। এসব টোটে ব্যাগের বাইরের অংশ পানামা ক্যানভাস ফেব্রিক দিয়ে তৈরি! আর ভেতরে সিলভার লাইনিংয়ের সঙ্গে থাকে কৃত্রিম চামড়ার প্যাডিং।

ছবি: ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি

সে জন্যই এ ব্যাগগুলো বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডির এসব ব্যাগের গ্রাহক সাধারণত ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা, যাঁদের মধ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাই প্রধান। আধুনিক ডিজাইন ও ব্যবহার সহজ হওয়ার কারণে ব্যাগগুলো গ্রাহকদের কাছে দারুণ সমাদৃত।

সুমাইয়া নওশীন ও মোহাম্মদ আলীনূর রহমান সিদ্দীক
ছবি: ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি

৪৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৭৫০ টাকার মধ্যেই থাকে এসব ব্যাগের দাম। ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি সিগনেচার টোটে ব্যাগগুলো ছাড়াও ব্যাকপ্যাক, নোটবুক, ল্যাপটপ ও বইয়ের সুদৃশ্য মোড়ক, পেনসিল ব্যাগ, পানির বোতল ইত্যাদি বিক্রি করে থাকেন। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানে ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডির টোটে ব্যাগের চাহিদা রয়েছে। তাই ভবিষ্যতে দেশের পাশাপাশি বাইরেও তারা তাদের ব্যাগ রপ্তানির পরিকল্পনা করছে।

ছবি: ক্লামজি ক্র্যাফটার বিডি