বুয়েটে তৃতীয়, কুয়েটে প্রথম খুলনার তামিম; কী ছিল তাঁর পড়ালেখার কৌশল

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছেন খুলনার সরকারি এম এম সিটি কলেজের এস এ এম তামিম। এ ছাড়া খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তানভীর রহমান

প্রথম আলো:

হাজারো শিক্ষার্থী বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। এতজনকে পেছনে ফেলে তৃতীয় হওয়া নিশ্চয়ই সহজ কাজ নয়। আপনার প্রস্তুতিতে কি বিশেষ কিছু ছিল?

এস এ এম তামিম: আমি শুধু চেষ্টা করেছি, যে বিষয়টাই শিখি না কেন, সেটা যেন ভালোমতো আয়ত্তে আসে। তারপর পরীক্ষার হলে গিয়ে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে লিখে আসতে পারলেই হলো। কখনো এভাবে চিন্তা করতাম না যে আমার এতজনকে পেছনে ফেলতে হবে অথবা আমার সামনে কতজন, কে আছে। আমি সব সময় চেষ্টা করতাম, যে জিনিসটা পড়ছি, যা শিখছি, তা যেন ভালোমতো শিখে পরীক্ষার হলে যেতে পারি।

প্রথম আলো:

এই প্রস্তুতি কখন থেকে শুরু হলো?

এস এ এম তামিম: আমি এতটুকু নিশ্চিত করতে চেয়েছি, উচ্চমাধ্যমিকের যে বইগুলো আছে, সেগুলো আমি শতভাগ ভালোভাবে পড়ব। যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে। আর পুরোপুরি ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি যেটা, সেটা উচ্চমাধ্যমিকের পরেই শুরু করেছি।

প্রথম আলো:

বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন দেখার শুরু কবে?

এস এ এম তামিম: নবম শ্রেণিতে যখন বিজ্ঞান নিলাম, তখন থেকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, এই বিষয়গুলো ভালো লাগত। পিওর (মৌলিক) বিষয়ে পড়ারও ইচ্ছা ছিল। আবার ক্যারিয়ার, বিভিন্ন সুযোগের দিকেও খেয়াল রাখতে হতো। সব মিলিয়ে দেখলাম যে প্রকৌশলে এই সুযোগ বেশি। আগ্রহের শুরু তখন থেকে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

মা-বাবা, পরিবার, বন্ধু, কলেজের শিক্ষক...কার কোন সহযোগিতা বা পরামর্শ বিশেষ কাজে এসেছে?

এস এ এম তামিম: আমার আম্মু তাবিন্দা নাজ খুলনার দৌলতপুর কলেজের গণিতের সহকারী অধ্যাপক। আম্মুর সহযোগিতা ছিল। উচ্চমাধ্যমিকের সময় বিভিন্ন স্যারের কাছে ব্যাচে পড়তাম। বুয়েট-কুয়েটের কিছু ভাইয়া ছিলেন, তাঁদের সাহায্য নিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়েছি। তাঁরা নির্দেশনা দিতেন, আমি সেই অনুযায়ী কাজ করতাম।

প্রথম আলো:

জুলাই মাস থেকেই দেশের শিক্ষার্থীদের মনোজগতের ওপর দিয়ে একটা বড় ঝড় গেছে। অনেকেই পড়াশোনায় মন দিতে পারেননি। আপনি কীভাবে মনোযোগ ধরে রেখেছেন?

এস এ এম তামিম: আমিও পড়ার টেবিলে তখন বসিনি। গত বছর ১৫ জুলাইয়ের পর সম্ভবত, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা যখন পেছাল, তখন থেকে আমার পড়া মোটামুটি বন্ধ। আগস্টের ৫ তারিখের পরও, সপ্তাহখানেক আমি পড়ার টেবিলে বসিনি। তারপর নতুন করে শুরু করেছি।

প্রথম আলো:

পড়ালেখার পাশাপাশি আপনার আর কিসে আগ্রহ?

এস এ এম তামিম: টুকটাক গেম খেলি, মুভি-সিরিজ দেখি।

প্রথম আলো:

শিক্ষাজীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় কোনটা ছিল বলে মনে করেন?

এস এ এম তামিম: ভর্তি পরীক্ষার এই পর্যায়টা। আসলে আস্তে আস্তে বয়স যত বাড়ছে, তত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। কঠিনের দিকে এগোচ্ছি।

প্রথম আলো:

বুয়েটে কোন বিষয় নিয়ে পড়বেন বলে ভাবছেন? কোনো ক্লাবে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা আছে?

এস এ এম তামিম: বুয়েটে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে (সিএসই) পড়ব। আমি এখনো জানি না, কী কী ক্লাব আছে। তবে বিতর্ক, দাবা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা আছে।

প্রথম আলো:

সামনের দিনগুলোয় নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

এস এ এম তামিম: সিএসই নিয়ে যেহেতু পড়ব, ওইদিকেই থাকতে চাই। কোডিং ও বিভিন্ন কম্পিটেটিভ প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহ আছে, তা ছাড়া মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা...এসব নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে।

আরও পড়ুন