টাকা জমাতে চাইলে যে ১০টি বৈশিষ্ট্য আপনার থাকতে হবে
বর্তমানের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা চাট্টিখানি কথা নয়। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য কাজটা বেশ মুশকিলও বটে। তবে ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছুটা সঞ্চয় করা বুদ্ধিমানের কাজ। সঞ্চয়ী মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা জেনে নেওয়া যাক, যেসবের চর্চা করতে পারলে আপনার পক্ষেও সঞ্চয়ী হয়ে ওঠা সহজ হবে।
১. চাওয়া ও প্রয়োজনের পার্থক্য বোঝা
রংবেরঙের স্বপ্ন জীবনেরই অংশ। আপনি এটা চাইবেন, ওটার স্বপ্ন দেখবেন—এ তো স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কোনটা আপনার ‘চাওয়া’ আর কোনটা সত্যিই ‘প্রয়োজন’, তা অনুধাবন করা জরুরি। তাতে নানা রকম ‘চাওয়া’ পূরণের বাড়তি খরচ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবেন। ধরুন, ছুটির দিনে রেস্তোরাঁয় খেতে যেতে চান আপনি। এটি কিন্তু আপনার ‘প্রয়োজন’ নয়।
২. বিলাসিতাকে নিজের প্রাপ্য মনে না করা
কঠোর পরিশ্রম করেন বলে যে বিলাসিতা আপনার প্রাপ্য হবে, তা কিন্তু নয়। যেমন স্পা কিংবা বিশেষ দোকানের কফি কিংবা বছর ঘুরলে বিদেশ ভ্রমণ। বরং এসবের চেয়ে অনেক কম খরচেই আয়েশ করার সুযোগগুলো কাজে লাগান একজন সঞ্চয়ী ব্যক্তি।
৩. সামর্থ্যের চেয়ে জীবনযাত্রার মান একটু নিচে রাখা
সঞ্চয়ী ব্যক্তি নিজের সামর্থ্যের চেয়ে একটু কম আয়েশি জীবন যাপন করেন। খরচের পাল্লাটা সহজে ভারী হতে দেন না তিনি। এমনকি আয় বাড়লেও বিলাসী জীবনযাপনের দিকে পা বাড়ান না। জীবনের আর্থিক পরিমণ্ডলে কোনো পরিবর্তন চলে এলে সেটির সঙ্গেও দ্রুত মানিয়ে নেন। প্রয়োজনে জীবনযাত্রার মান আরও একটু নামিয়ে আনতে দ্বিধা করেন না।
৪. সঞ্চয়ের শুরুটা দেরিতে নয়
অনেকেই শৈশবে সঞ্চয়ের শিক্ষা পান। আবার তেমন শিক্ষা না পেয়ে থাকলেও তরুণ বয়সেই সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহী হন অনেকে। এ দুটিই দারুণ ব্যাপার। সঞ্চয়ী ব্যক্তি সঞ্চয় শুরু করতে দেরি করেন না। ক্যারিয়ারের শুরুতে রোজগার কম থাকলেও তিনি সঞ্চয় শুরু করে দেন। ছোট ছোট সঞ্চয়েই তিনি গড়ে তোলেন ভবিষ্যৎ।
৫. সঞ্চয়কেই প্রাধান্য দেওয়া
সঞ্চয়ী ব্যক্তি অবধারিতভাবেই সঞ্চয়কে বেশি গুরুত্ব দেন। অন্যান্য খরচের আগে তাঁরা নিশ্চিত করেন, সঞ্চয়টা যাতে হয় ঠিকঠাক।
৬. সঞ্চয় বাদ যাওয়ার সুযোগ না রাখা
কর্মস্থলে প্রভিডেন্ট ফান্ড-জাতীয় সুবিধা না থাকলেও একজন সঞ্চয়ী ব্যক্তি প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করেন। কেউ কেউ লাভজনক বিনিয়োগও করেন। সঞ্চয় যাতে বাদ পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে ‘অটোমেটিক পেমেন্ট’-জাতীয় প্রযুক্তির সাহায্যও নেন একজন সঞ্চয়ী ব্যক্তি।
৭. তিন থেকে ছয় মাসের খরচ হাতে রাখা
সঞ্চয়ী ব্যক্তি অন্তত তিন থেকে ছয় মাসের খরচ সব সময়েই হাতে রাখেন। জীবনের কোন পর্যায়ে কোন চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে, তা তো কারও আগে থেকে জানা থাকে না। তাই নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়টুকুর জন্য এই আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো সবার জন্যই।
৮. বাজেট মেনে চলা
সঞ্চয়ী ব্যক্তি নিজস্ব বাজেট অনুযায়ী চলেন। আয় অনুযায়ী ব্যয়ের একটা তালিকা তৈরি করে রাখা আবশ্যক। তাতে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যয় এড়ানো সহজ হয়।
৯. খুঁটিনাটি খরচের হিসাব রাখা
‘বিন্দু বিন্দু জলকণা’ দিয়েই কিন্তু ‘অতল সাগর’ গড়ে ওঠে। তাই সঞ্চয়ী ব্যক্তি খুঁটিনাটি খরচেরও হিসাব রাখেন। হিসাব রাখলে বাড়তি ব্যয় এড়ানো সহজ হয়।
১০. ‘অফার’ বা ‘ডিল’-এর খোঁজ রাখা
কেনাকাটায় ভালো ‘অফার’ বা ‘ডিল’ পেলে সেটি কাজে লাগান সঞ্চয়ী ব্যক্তি। এভাবে অনেক ক্ষেত্রেই খরচ কমিয়ে ফেলা যায়।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট