কম্পিউটার ছিল না, মুঠোফোনেই শিখেছি এইচটিএমএল
স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়েননি। কিন্তু তাঁর ভালো লাগা বা কাজ এই বিজ্ঞান ঘিরেই। কীভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ জন্মাল? কীভাবে নিজেকে তৈরি করলেন? পড়ুন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শামস সাইফ–এর কথা।
ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিজ্ঞান নিয়ে পড়া হয়ে ওঠেনি। যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি, তখন এলাকার এক বড় ভাইয়ের কম্পিউটারে গেমস খেলতাম। খুব কৌতূহল জাগত এই ভেবে যে একটা যন্ত্রের ভেতর আলাদা একটা কৃত্রিম জগৎ! সেখান থেকেই আসলে আমার কম্পিউটারের প্রতি বিস্ময়ের শুরু। নিজস্ব কোনো কম্পিউটার ছিল না, তাই দুই বছর টাকা জমিয়ে আর বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে পুরোনো একটা কম্পিউটার কিনি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়। কিন্তু সেই কম্পিউটার বেশ পুরোনো হওয়ায় আর ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় খুব বেশি কিছু শিখতে পারিনি।
এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর লম্বা একটা ছুটি পেলাম। সেই ছুটিতে সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের প্রাথমিক বিষয়গুলো (বেসিক) শিখে নিলাম ইউটিউব থেকে। কিন্তু আরও এগোনোর আগেই কম্পিউটারটি নষ্ট হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় আর কম্পিউটার জগতের কিছু শেখা হয়নি। যখন কলেজে পড়ি, তখন আইসিটি বই থেকে বেশ কিছু ধারণা পাই ওয়েব সম্পর্কে। কৌতূহল বেড়ে যায়। এইচটিএমএলের বেশ কিছু বিষয় শিখে ফেলি মুঠোফোন দিয়েই। এরপর এইচএসসি, ভর্তিযুদ্ধ, সব পার করে ভর্তি হই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে।
নেই কোনো নিজস্ব ল্যাপটপ বা কম্পিউটার, তাই প্রথম বর্ষ কেটে যায় একাডেমিক পড়াশোনায়। দ্বিতীয় বর্ষের মার্চ মাস থেকে শুরু হয় করোনার বন্ধ। ২০২০ সালের শেষের দিকে কিস্তিতে একটা ল্যাপটপ কিনি। এরপর শুরু হয় আমার প্রোগ্রামিং যাত্রা। একে একে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং ওয়ার্ডপ্রেস আয়ত্ত করে নিই। শুরু করি ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিংয়ের টাকা দিয়ে প্রোগ্রামিং হিরোর ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্সে ভর্তি হয়ে ফুল স্ট্যাক ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখি। এখন ফাইবার অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্স ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ করছি।