যত দিন চলে যাচ্ছে, ঈদের আনন্দ কিন্তু বাড়তেই থাকছে। সবার মধ্যে ঈদের প্রস্তুতির তাড়া চলে আসছে। সেই সঙ্গে মেয়েদের তো একটা ব্যস্ততা থাকেই। পারফেক্ট ড্রেস, অ্যাকসেসরিজ একটা স্ট্যান্ড আউট স্টেটমেন্টের জন্য। সেই স্ট্যান্ড আউট স্টেটমেন্ট কিন্তু পারফেক্ট লুক ছাড়া পূর্ণ হয় না। তখনই চলে আসে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—কীভাবে ঠিক করব ঈদের জন্য পারফেক্ট মেকআপ?
যখন ঈদ মেকআপের কথা চিন্তা করি, তখন কিন্তু একবেলার জন্য না, বরং সারা দিনের জন্য একটা লুক তৈরি করতে হবে আর সেটা খুব তাড়াতাড়িও করা যাবে। খুব গ্ল্যামারস লাগবে এবং টাচ আপ করার সুযোগ থাকবে।
তার সঙ্গে আরও মাথায় রাখতে হবে ট্রেন্ড অ্যান্ড স্টাইল থেকে আবহাওয়া। এই সবকিছু মাথায় রেখেই আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু সমাধান।
এখন যেহেতু গরমকাল, প্রচুর ঘাম হয়, তাই মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য আমাদের কিছু টিপস মানতে হবে। ফাস্ট স্টেপ হলো এক্সফলিয়েট করা, আমাদের খুব ভালো মানের স্ক্রাবার ব্যবহার করতে হবে; অথবা চালের গুঁড়া দিয়ে ঘরেও বানিয়ে নিতে পারি। এক্সফলিয়েশনের পর টিস্যুতে বরফ নিয়ে মুখে ঘষে নিতে হবে, বরফ ত্বকে প্রশান্তি দেয়।
এরপর আমাদের রিফ্রেশিং টোনার ইউজ করতে হবে। টোনার আমাদের রোমকূপগুলো মিনিমাইজ করে এবং ত্বককেও সতেজ করে। এরপর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সেরাম ইউজ করতে হবে, যা ত্বককে হাইড্রেট করবে এবং প্রটেক্ট করবে সব ধরনের এনভায়রনমেন্টাল ড্যামেজ থেকে।
এরপর ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিন, এসপিএফ অবশ্যই ৩০ থেকে ৫০+ হতে হবে। সানস্ক্রিন ব্যবহার করাটা খুবই জরুরি, সূর্যের তাপ থেকে স্কিন সুরক্ষা দেওয়ার জন্য।
প্রস্তুতি পর্ব শেষ।
এবার যাওয়া যাক মেকআপে। মেকআপ শুরুর আগে আমরা প্রাইমার ব্যবহার করতে পারি। প্রাইমার মেকআপকে স্থায়িত্ব দেয়। প্রথমে আমি ব্যবহার করব ফাউন্ডেশন; যেটা আমি বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে খুব ভালোভাবে ব্লেন্ড করে দেব।
এরপর আমি স্ট্রেইট চলে যাব কন্টুরিং ও কন্সিলিংয়ে। এর জন্য আমি ব্যবহার করেছি আমার পছন্দের একটা কন্টুর ক্রিম প্যালেট। এটা দিয়ে আমি কন্টুর লাইন দিয়ে দিচ্ছি এবং মুখের যে জায়গাগুলো আমি হাইলাইট করতে চাই, সেখানে কন্সিলার ব্যবহার করে হাইলাইট করে দিচ্ছি।
এবার চোখের মেকআপ। এটা শেষ করে আমি বেজ মেকআপ করব।
চোখের মেকআপের জন্য আমি প্রথমে আমার আইশ্যাডো প্যালেটের ডার্ক মেরুন কালার চোখের ক্রিজে ব্যবহার করব, যাতে চোখটা প্রমিনেন্ট হয়। চোখের পাতায় একটু ব্রোঞ্জ কালার ব্যবহার করেছি। ব্রোঞ্জ কালার লুকে একটু ফেস্টিভ টাচ দেয়। আর যখন ঈদের কথা এল, তো তখন আমরা সোনালি রঙের ছোঁয়া একটু না একটু খুঁজেই পাই।
এই ফাঁকে বলে রাখি, ঈদ লুকের জন্য আমি যে ড্রেসটা বেছেছি, সেটা ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার সারাহ কারিম। ড্রেসে ফয়েল অ্যাপ্লিক লেদার দিয়ে জিওমেট্রিক প্যাটার্নে খুব সুন্দর কাজ করা হয়েছে।
এর পরের স্টেপ হচ্ছে আইলাইনার। আইলাইনারের সঙ্গে ভুরুটাও ব্রোজ করে নিয়েছি একটা ক্লিন লুকের জন্য।
এবার আমরা ফিল করব আই ব্রোজ। আমি সাধারণত প্রেফার করি আই ব্রো পেনসিল আই ব্রো ফিল করার জন্য। যদি গ্ল্যামারাস লুক হয়, তাহলে আই ব্রো ব্রাশ দিয়া ডার্ক ব্রাউন কালারটা যোগ করে দিই। এই ড্রেসটা কিন্তু চমৎকার রয়েল ব্লু কালারের, যে কারণে আমি মেকআপ লুক আরেকটু গ্ল্যাম অ্যাড করার জন্য রয়েল ব্লু আইলাইনার ব্যবহার করছি আইল্যাশ লাগানোর পর।
এরপর আমি শেষ করব বেজ মেকআপ। বেজ মেকআপ শেষ করার জন্য প্রথমেই একটু টাচআপ করে নেব আন্ডার আইতে; এক্সট্রা আই শ্যাডো পাউডার লেগে থাকলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এরপর বেজটা শুরু করব কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে। কম্প্যাক্ট পাউডার ইউজ করতে হবে স্কিন টোন অনুযায়ী। এরপর কণ্টুর এবং কন্সিল করতে হবে। তারপর ব্লাশ ব্যবহার করেছি। একটা লুমিনাস গ্লোর জন্য অ্যাড করেছি হাইলাইটার।
লুকটা শেষ করব ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক দিয়ে। আমি আজকে বেছে নিয়েছি লিপস্টিকের একটা ন্যুড শেড। ঠোঁটকে আরও একটু প্রমিনেন্ট করার জন্য ঠোঁটের মাঝখানে যোগ করেছি আরও এক শেড লাইট কালার। এখন দুটো কালার সুন্দরভাবে ব্লেন্ড করতে হবে।
আজকের লুকটা আমি ক্রিয়েট করেছি ব্রোঞ্জ গোল্ড কালার দিয়ে। কারণ দেখা যায় ঈদের পোশাকে সোনালি রঙের ছোঁয়া কমবেশি থাকেই। আর এই রংটা খুব সহজ এবং সুন্দরভাবে ব্যবহার করা যায়।
লুকসের সঙ্গেও সুন্দরভাবে মিশে যায়। আর আমার আজকের ড্রেসটা যেহেতু খুব সুন্দর রয়েল ব্লু কালারের, তাই আমি ইউজ করেছি রয়েল ব্লু আইলাইনার। ড্রেসটা যদি মেজেন্টা, সবুজ বা ফিরোজা হলে আপনারা ওই রঙের আইলাইনারও ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার লুকে যোগ হবে এক্সট্রা স্টাইল আর আপনাকে খুব প্লেফুলও লাগবে।
ছবি: ফারনাজ আলম