শীতের সময় ত্বক শুষ্ক হবে—এটাই স্বাভাবিক। এখন থেকেই ত্বক ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা দরকার। ক্রিম, লোশন, সাবান—সব ধরনের প্রসাধনীতেই থাকতে হবে বাড়তি ময়েশ্চারাইজার। এসব পরামর্শ সব পুরুষের জন্য প্রযোজ্য। শীতের সময় ত্বক ভালো রাখতে যত্ন প্রয়োজন এখন থেকেই। বাড়িতে যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সেবাও নিতে পারেন।
এ সময়ের যত্ন
ত্বকের ধরন অনুযায়ী এবং আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ফেসিয়াল করানো যায়। সময়–সুযোগ পেলে স্পা করাতে পারেন। এ ছাড়া মাথায় শুধু তেল মালিশ করানো যেতে পারে। কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে হবে। শেভ করার পর ক্রিম লাগালে ত্বকে ফাটল ধরবে না। শীত হোক বা অন্য যেকোনো সময়, ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক জিনিসই সবচেয়ে ভালো। গাজর ও দুধ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করতে পারেন। সুজি, দুধের সর বা দুধ এবং মধু মিশিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। সুজি মেশানোর আগে ভেজে নেওয়া ভালো। রোদে বেশি থাকা হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। সানস্ক্রিন ক্রিমে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ) অন্তত ৫০ থাকতে হবে। এর চেয়ে কম এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করে লাভ নেই। সমুদ্রের পাড়ে সানস্ক্রিনসামগ্রী ব্যবহার করতেই হবে। ত্বক পুড়ে গিয়ে থাকলে টমেটো ব্লেন্ড করে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের পোড়াভাব কমাতে ডাবের পানি বেশ ভালো কাজ করে, জানান রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা। ত্বকে লোশন লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। সেটি যেন ত্বকে ভালোভাবে মিশে যায়। তারপর পোশাক পরুন। এতে এ সময়ে ত্বকে আর্দ্রতা থাকবে।
শোভন মেকওভারের কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা জানান, ডালের বেসন আর গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন। যতক্ষণ না ঘন হয়ে পেস্টের মতো হয়ে আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত বেসনের সঙ্গে গোলাপজল মেশাতে হবে। মুখমণ্ডলে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর উঠিয়ে ফেলতে পারেন। এতে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়ে যাবে। সতেজ বোধ করবেন।
আরেকটি বিষয়, এ সময় কনুই, হাঁটুর চামড়াও অন্য সময়ের চেয়ে বেশি কালচে দেখায়, শুষ্ক হয়ে যায়। এ বিষয়ে কথা বলার সময় সাক্ষাৎকারে হেয়ারোবিক্সের রূপ–পরামর্শদাতা শাদীন মাহবুব একবার জানিয়েছিলেন, শক্ত চামড়া নরম করতে একটু বেশি পরিমাণে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে রাখা যায়। ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে পরিমাণমতো তরল দুধ মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে কালচে জায়গাগুলোর ওপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে বৃত্তাকারে মালিশ করতে পারেন। দুই দিন পরপর এই মালিশ করলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। অ্যালোভেরাপাতা থেকে জেল বের করেও কালচে ও রুক্ষ স্থানে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। আস্তে আস্তে দাগ উঠে যাবে। এ ছাড়া টক দই ও ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালেও উপকার মিলবে।
একটু ভারী ক্রিম ব্যবহার করুন। শীতের সময় ত্বক পরিষ্কার করার প্রতি অনেকেরই অনীহা দেখা যায়। এ কারণে পরে র্যাশ হতে পারে। প্রতিদিন ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার এ সময় বাধ্যতামূলক। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। না হলে তৈলাক্ত ত্বকও শুষ্ক হয়ে যাবে। অন্যান্য ত্বকের জন্য তেল আছে, এমন ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।