৩০ বছরেই টাক পড়ছে? প্রতিকার জেনে নিন
পুরুষদের টাক পড়ার, বিশেষ করে ‘মেল প্যাটার্ন বল্ডনেস’–এর পেছনে বংশগত কারণকেই দায়ী মনে করা হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তবে এখন জানা গেছে, পরিবেশগত ও জীবনধারাসম্পর্কিত কিছু কারণ চুল পড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ কারণেই ৩০–এর কোঠায় পা দিলেই অনেক পুরুষের চুল পড়তে শুরু করে, পরে ধীরে ধীরে রূপ নেয় টাকে। এ বয়সে টাক পড়ার কারণগুলো জেনে রাখুন, সঙ্গে প্রতিকার।
৩০ বছরের শুরুতেই টাক পড়ার কারণ কী কী
১. স্থবির জীবনধারা: সারাক্ষণ বসে কাজ করা এবং শারীরিক কার্যকলাপ করা না হলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং চুল পড়া শুরু হয়।
২. দীর্ঘমেয়াদি চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিয়ে আমাদের দৈনন্দিন কাজ করতে হয়। এই অতিরিক্ত চাপ কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের ফলিকল দুর্বল করে এবং চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়।
৩. অপর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চুলের ফলিকল পুনরুজ্জীবিত হতে পারে না, ফলে চুল পড়া শুরু হয়।
৪. প্রক্রিয়াজাত খাবার: পুষ্টিহীন ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের হরমোন ভারসাম্য হারায়। এতে চুল বাড়তে পারে না।
৫. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ডিএইচটি (ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন) বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের ফলিকলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং টাক পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। তাই টাক পড়া ঠেকাতে হলে প্রাথমিক লক্ষণ দেখার পরপরই প্রতিরোধ করুন। ধারাবাহিক কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে চুল পড়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পুষ্টিকর খাবার খান
চুল ভালো রাখতে ভিটামিন ও খনিজযুক্ত খাবার খান।
প্রোটিন চুল গঠনে সাহায্য করে। তাই প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন ডিম, মটরশুঁটি ও চর্বিহীন মাংস খেতে হবে।
আয়রন ও জিংক চুলের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে; তাই চুল পড়া রোধে পালংশাক, ডাল ও বাদাম খান। এসবে আয়রন ও জিংক পাওয়া যায়।
ভিটামিন ই ও বায়োটিন চুলের ফলিকল সুস্থ রাখে। এসব পাওয়া যায় অ্যাভোকাডো, নানা ধরনের বীজ ও বাদামে।
স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বকের যত্ন নিন
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সালফেটবিহীন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এ ধরনের শ্যাম্পু প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখে। মাথার ত্বকে ক্যাস্টর অয়েল, বাদাম বা নারকেল তেল দিয়ে মালিশ করুন। এই মালিশ রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
চুল পড়া বন্ধে প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো গ্রহণ করুন
১. পেঁয়াজের রস: পেঁয়াজের রসে প্রচুর সালফার রয়েছে। এটা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়। মাথায় ২০ মিনিট পেঁয়াজের রস রেখে ধুয়ে ফেলুন।
২. অ্যালোভেরা: এটি স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। প্রতি সপ্তাহে মাথার ত্বকে টাটকা অ্যালোভেরা জেল লাগান।
৩. গ্রিন-টি: এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ডিএইচটি হরমোন কমায় বলে চুল পড়া কমে যায়। ঠান্ডা গ্রিন-টি মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন।
যেসব অভ্যাস চুলের জন্য উপকারী
১. রাসায়নিক চিকিৎসা এবং তাপভিত্তিক সরঞ্জামের ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন।
২. চুল যাতে না ছেঁড়ে, সে জন্য চওড়া দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন
১. চাপ কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন।
২. প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৩. রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
এরপরও চুল পড়া না কমলে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া