ত্বকের বয়স কমাতে পাঁচ অভ্যাস

ত্বকের সজীবতা ধরে রাখবে ৮ ঘন্টার ঘুমছবি: কবির হোসেন

ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখতে চান না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। আশা থাকে ত্বক থাকবে সুন্দর, ত্রুটিহীন। তবে ব্যস্ত নাগরিক জীবনে পরিচর্যার সময় মেলে কই! বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে নানা ধরনের পরিবর্তন আসতে থাকে, যেমন বলিরেখা, ত্বকে ভাঁজ পড়া, উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া। তবে কিছু সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললে ত্বকে বয়সের ছাপ কমানো সম্ভব। ত্বক পরিচর্যার পাশাপাশি ভেতর থেকেও যত্ন নেওয়ার কৌশল শিখতে হবে, জানালেন হারমনি স্পা অ্যান্ড বিউটি স্যালনের কর্ণধার রাহিমা সুলতানা।

খাদ্যাভ্যাস সঠিক হলে ভালো থাকবে ত্বক
ছবি: কবির হোসেন

পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস

ত্বকের বয়স কমাতে শুরুতেই আসে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসের কথা। সুন্দর ত্বকের জন্য সঠিক খাবার বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ত্বককে সতেজ রাখার জন্য ভিটামিন সি, ই, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। বিভিন্ন রকমের ফল থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন সি। এ ছাড়া শাকসবজি, বাদাম, মাছ ও দানাশস্য জোগান দেবে অন্যান্য পুষ্টি, যা ত্বকের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এ ধরনের খাবার ত্বকের কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে এবং বার্ধক্যপ্রক্রিয়া ধীর করে। এ ছাড়া চিনিযুক্ত বা মিষ্টিজাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

পর্যাপ্ত ঘুম

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের ঘাটতি ত্বকের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ও গভীর ঘুম না হলে ত্বকের কোষ পুনরুদ্ধারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যা ত্বককে শুষ্ক ও প্রাণহীন করে। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমানোর সময় শরীরের কোষগুলোর পুনর্গঠনপ্রক্রিয়া সচল থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

মনকে চাপমুক্ত রাখবে ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম
ছবি: কবির হোসেন

মানসিক চাপমুক্ত থাকা

মানসিক চাপ ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার একটি প্রধান কারণ। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয় বলিরেখা ও ব্রণের সমস্যা। চাপমুক্ত থাকার জন্য ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা নিজের পছন্দের কাজে ডুবে থাকতে পারেন। মানসিক শান্তি ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে অপরিহার্য।

সানস্ক্রিনের ব্যবহার

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের বার্ধক্যপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। সানস্ক্রিন ব্যবহার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। বাইরে বের হওয়ার আগে ত্বকে এসপিএফ ৫০ বা তার বেশি মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। এটি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচাতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নে প্রয়োজন সান্সক্রিনের ব্যবহার
ছবি: কবির হোসেন

পর্যাপ্ত পানি পান

ত্বককে আর্দ্র ও কোমল রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করার বিকল্প নেই। পানি ত্বকের কোষগুলোকে ভেতর থেকে সজীব করে এবং ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখে। প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। এতে ত্বকের বলিরেখা কমে ত্বকে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।

মাথায় রাখতে হবে, ত্বকের বয়স কমানোর জন্য কোনো জাদুকরি সমাধান নেই। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক শান্তি, নিয়ম করে ত্বকের যত্ন নেওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক তারুণ্য ধরে রাখা সম্ভব। দীর্ঘ মেয়াদে এই অভ্যাসগুলো আপনাকে সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বক উপহার দেবে।