২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

চন্দন যে তিনভাবে ব্যবহার করা যায়

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং নানা সমস্যার সমাধানে চন্দন বেশ কার্যকরমডেল: নন্দিতা, ছবি: সুমন ইউসুফ

একদিকে ভ্যাপসা গরম, অন্যদিকে হুটহাট বৃষ্টি। রোদ আর বৃষ্টির এই খেলায় ত্বকের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এ সময় ত্বকের সুরক্ষায় চন্দন হতে পারে রূপচর্চার সঙ্গী। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং রকমারি সমস্যা দূর করতে চন্দন বেশ কার্যকর। গুঁড়া, তেল, প্যাক, স্ক্রাব—নানাভাবে ব্যবহার করা যায় চন্দন। তবে এসব ব্যবহারের কিছু নিয়মকানুন আছে। চন্দনের সঠিক ব্যবহারের নিয়ম জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী আফরিন মৌসুমী।

চন্দন স্ক্রাব

চন্দনের স্ক্রাব নিয়মিত ব্যবহারে রোদে পোড়া ভাব দূর হবে
ছবি: সুমন ইউসুফ

আফরিন মৌসুমী আরও জানান, চুলায় চন্দন কাঠ জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিতে হবে। ১ কাপ চন্দনের নির্যাসের সঙ্গে ৫ থেকে ৬ কাপ পানি মিশিয়ে স্টিলের পাত্রে আবার জ্বাল দিয়ে সেই মিশ্রণের সঙ্গে চিনি, গমের ভুসি, চন্দনগুঁড়া ভালোভাবে গুলে নিন। সঙ্গে দিন কয়েক ফোঁটা লেবু রস, নারকেল তেল বা জলপাই তেল। সব একসঙ্গে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চন্দনের স্ক্রাব। এই স্ক্রাব শরীরের মৃত কোষ দূর করে। নিয়মিত ব্যবহারে রোদে পোড়া ভাব দূর হয় এবং বডি পলিশিংয়ের কাজও করে। বাসায় তৈরি এই স্ক্রাব ফ্রিজে রেখে এক সপ্তাহের মতো সংরক্ষণ করা যাবে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও ব্রণযুক্ত, তাঁরা রক্তচন্দনকে তুলসী আর পুদিনা পাতার রসে ভিজিয়ে ব্যবহার করবেন। নিয়মিত এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্রণের সমস্যা সেরে যাবে, ঠান্ডা ও সতেজ হয়ে উঠবে ত্বক। চন্দনের সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করলেও সুফল পাওয়া যায়।

চন্দন প্যাক

প্রায় সব ধরনের ত্বকে চন্দন ব্যবহার করা যায়
ছবি: সুমন ইউসুফ

মূলত দুরকম চন্দন পাওয়া যায়; রক্তচন্দন ও শ্বেতচন্দন। প্রায় সব ধরনের ত্বকে সারা বছরই চন্দন ব্যবহার করা যায়। তবে যাঁদের ত্বক খুবই তৈলাক্ত, তাঁরা লাল চন্দনের গুঁড়া সরাসরি ত্বকে না লাগিয়ে চন্দন মিহি করে নিয়ে, সারা রাত কাঁচা দুধে ভিজিয়ে রেখে, ক্রিম তৈরি করে নিতে পারেন। সেটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সকালে প্যাকের মতো মুখে লাগাতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে চন্দনের নির্যাস শোষণ করতে একটু বেশি সময় লাগে। তবে এটি ত্বকের গভীরে গিয়ে ময়লা পরিষ্কার করে, ধরে রাখে ত্বকের জেল্লা। যাঁদের ত্বক শুষ্ক কিংবা সাধারণ, তাঁরা সাদা চন্দনের মিহি গুঁড়া সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে চেহারায় মাখলে উপকার পাবেন।

চন্দন তেল

চন্দন তেল ব্যবহারে মাথার ত্বক ঠান্ডা থাকে
ছবি: সুমন ইউসুফ

চন্দনের তেল বেশ উপকারী। মূলত এসেনশিয়াল অয়েল হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। ১০০ মিলিলিটার নারকেল তেল কিংবা জলপাই তেলের সঙ্গে তিন থেকে চার মিলিলিটার চন্দনের নির্যাস বা তেল মিশিয়ে সহজেই ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া চুলে পরিমাণমতো চন্দন তেল ব্যবহার করলে যেমন উপকার পাওয়া যায়, অন্যদিকে মাথার ত্বকও ঠান্ডা থাকে।

চন্দনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রদাহ বা অ্যালার্জির সমস্যা কমাতেও চন্দন সাহায্য করে। শুধু তা–ই নয়, ত্বকের জেল্লা বজায় রাখতে, ত্বক মসৃণ আর টান টান রাখতে, কালো দাগ, মেছতা, ব্রণসহ ত্বকের অনেক সমস্যা সমাধানে ওষুধের মতো কার্যকর চন্দন।

ঠিকঠাক ফল পেতে চাইলে চন্দন ব্যবহার করতে হবে প্রতিদিন, জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী। কারণ, স্থায়ী সমাধান দিলেও চন্দন ধীরে কাজ করে। চন্দনের নিয়মিত কার্যকরী ব্যবহারে দিনের পর দিন আমরা ত্বকের পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পারব।