আবার সুযোগ পেলে মনোবিজ্ঞানে পড়ব: মিথিলা
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা শুধু অভিনয়ে নয়, পড়ালেখাতেও তুখোড়। স্নাতক করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। এখন পিএইচডি করছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন তিনি। পড়ালেখা নিয়ে তাঁর কী ভাবনা? কী পরামর্শ? জানিয়েছেন ‘স্বপ্ন নিয়ে’কে।
উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। তখন কুয়েত মৈত্রী হলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলাম। সময়টা এত দ্রুত চলে যাচ্ছিল! বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে পড়ালেখা করতে হয়, বুঝতে বুঝতেই দেখি দ্বিতীয় বর্ষে উঠে গেছি। তখন এখনকার মতো এত অনলাইন বা পিডিএফ ছিল না। দ্বিতীয় বর্ষ থেকে কয়েক ধরনের নোট এবং বই পড়তাম। পরীক্ষার সময় নিজের মতো করে উত্তর লিখতাম। নিজের জন্য নোট করে পড়তাম মাস্টার্সের সময়। পরে দেখেছি সেই নোট আমারই বন্ধুরা বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে প্রথম দিকে মানিয়ে নেওয়া কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। আমি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়েছি বলেই হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে গিয়েছিলাম। কলাভবনের করিডরে দেখা যেত আমরা অন্য বিভাগের সামনেই বেশি আড্ডা দিতাম। এখনো সেই সময়গুলো মিস করি।
আবার সুযোগ পেলে বোধ হয় মনোবিজ্ঞানে ভর্তি হতাম। এখন মনোবিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে আমি কাজ করি। মনোবিজ্ঞানে মানুষের মন তো শুধু নয়, সমাজের নানা বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। সমাজের গতি কীভাবে মানুষের মন ঠিক করে, শিশুমন কীভাবে পরিবর্তিত হয়—এসব নিয়ে আমার খুব আগ্রহ।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টে মাস্টার্স করেছি। এ ছাড়া আমার পেশাজীবনে কাজে আসে, এমন বিভিন্ন ডিগ্রি-কোর্স করেছি সুযোগ পেলেই। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিয়ে পড়েছি। পিএইচডি করছি জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর বই পড়তাম। এখনো পড়ি। নীলক্ষেত থেকে নিয়মিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইপত্র কিনতাম। ফিকশন, নন-ফিকশন—সব ধরনের বই। সব বয়সের মানুষের জন্য পড়া খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। এখনকার কিশোর, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়, তাদের বলব, যে বিষয়েই ভর্তির সুযোগ পাও না কেন, নিজের মতো করে পড়াশোনা করতে হবে। শুধু ক্যারিয়ারের কথা ভাবলে চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোকে রঙিন করতে হবে, বন্ধুত্ব করতে হবে, মানবিক দিকগুলোকেও শক্তিশালী করতে হবে।