অন্তর্মুখী নাকি বহির্মুখী, কোন ধরনের মানুষেরা বেশি সুখী
আমাদের মধ্যে কেউ হয়তো খুব অন্তর্মুখী, কেউ আবার বহির্মুখী। যাঁরা বহির্মুখী, তাঁরা প্রাণবন্ত, সামাজিক, সব সময় চঞ্চল এবং মানুষের ভিড়ে আনন্দ খুঁজে পান। অন্যদিকে যাঁরা অন্তর্মুখী, তাঁরা নির্জনতা উপভোগ করেন, অল্প কিছু মানুষের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে ভালোবাসেন এবং আত্মবিশ্লেষণে তৃপ্তি পান।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বহির্মুখীরা দৈনন্দিন জীবনে বেশি আনন্দ নিয়ে বাঁচেন। তবে তাঁদের এই আনন্দ ক্ষণস্থায়ী। অন্তর্মুখীদের জীবনযাপনে হয়তো আনন্দ–উচ্ছ্বাসটা কম, কিন্তু তা অনেক বেশি স্থায়ী ও গভীর। কিন্তু দিন শেষে কারা বেশি সুখী?
বহির্মুখীদের সুখের ধরন
বহির্মুখী স্বভাবের মানুষদের সামাজিক দক্ষতা বেশি এবং সহজেই অন্যদের সঙ্গে মিশে হাসিঠাট্টা করতে পারেন। তাঁরা দলগতভাবে কাজ করতে পছন্দ করেন। যেকোনো আড্ডার প্রাণ হয়ে ওঠেন। গবেষণায় দেখা গেছে, বহির্মুখীরা বেশি ইতিবাচক। তাঁরা হাসিখুশি থাকেন এবং আশপাশের মানুষদেরও আনন্দ দিতে পারেন।
তাঁদের সুখ অনেকাংশে সামাজিক সম্পর্ক, আড্ডা, অনুষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। ফলে তাঁরা কখনো একা থাকতে পারেন না। নির্জন মুহূর্তে তাঁরা সহজেই বিষণ্ন হয়ে পরেন। তবে বহির্মুখীদের জীবন উৎসবমুখর হলেও তাঁদের আনন্দ বাহ্যিক কারণের ওপর নির্ভরশীল।
অন্তর্মুখীদের সুখের ধরন
অন্তর্মুখী মানুষদের বন্ধু কম, কিন্তু তাঁদের সম্পর্কগুলো সাধারণত খুবই গভীর ও অর্থবহ হয়। তাঁরা গভীর আলাপচারিতা পছন্দ করেন এবং তাঁদের যোগাযোগের ধরন হয় স্থিতিশীল। অন্তর্মুখীরা নিভৃতে সময় কাটাতে ভালোবাসেন। গভীর সম্পর্ক থেকে আনন্দ খুঁজে পান। তাঁদের সুখ বাহ্যিক উৎসের ওপর নির্ভর করে না, বরং আসে মনের ভেতরের প্রশান্তি থেকে।
একা সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন বলে তাঁদের মানসিক স্থিরতা ও সুখের অনুভূতিও হয় দীর্ঘস্থায়ী। অন্তর্মুখীদের সুখ হয়তো বহির্মুখীদের মতো অতটা তীব্র নয়, তবে তা অনেক বেশি স্থিতিশীল ও গভীর।
তাহলে কে বেশি সুখী
সুখের সংজ্ঞা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন। বহির্মুখীরা আনন্দ পান ব্যস্ত সামাজিক জীবনে, মানুষের সংস্পর্শে এবং প্রাণচঞ্চল পরিবেশে। আর অন্তর্মুখীরা প্রশান্তি খুঁজে পান নিভৃতে সময় কাটানো, গভীর সম্পর্ক ও আত্মজ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে। তবে অন্তর্মুখী মানুষদের সুবিধা হলো, তাঁরা কখনো নিজেকে একা মনে করেন না এবং তাঁদের ভালো বা সুখে থাকার জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীলও হতে হয় না।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট