বদ্ধ ঘর বা বাথরুমে আগুন জ্বালানোর সময় যেসব সাবধানতা অবলম্বন করবেন
আবদ্ধ ঘর কিংবা বাথরুমে বিভিন্ন প্রয়োজনে আগুন জ্বালানোর প্রয়োজন পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাতে কোনো বিপদও হতে দেখা যায় না। তবে আবদ্ধ জায়গায় আকস্মিক অগ্নিদুর্ঘটনার সংবাদও কখনো কখনো আমরা পাই। আদতেই কি আবদ্ধ জায়গায় অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি?
আবদ্ধ জায়গায় নানা কারণেই জমা হতে পারে গ্যাস। এই গ্যাসের মাত্রা খুব বেশি হয়ে গেলেই বিপদ। তখন ওই ঘরে দেশলাই বা লাইটার ধরালেই আগুন ধরে যেতে পারে। বদ্ধ রান্নাঘরে গ্যাসের লিকেজের কারণে এবং বদ্ধ বাথরুমে প্রাকৃতিক গ্যাস জমা হওয়ার কারণে এ ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এমনটাই জানালেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তালিকাভুক্ত অগ্নিনিরাপত্তা পরামর্শক ও অ্যাশরে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মো. হাসমতুজ্জামান।
ধরা যাক, আপনার ঘরে তেল, সুগন্ধি বা অন্য কোনো রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষিত আছে। রাসায়নিকের পাত্রের মুখটা ভালোভাবে আটকানো থাকলেও কিন্তু পাত্রের ভেতর থেকে খুব অল্প পরিমাণ গ্যাস ক্রমাগত নির্গত হতে পারে আপনার অজান্তেই। ঘরটা আবদ্ধ থাকলে এই গ্যাস জমতে থাকে ঘরে। গ্যাস জমা থাকা অবস্থায় ঘরে দেশলাই বা লাইটার ধরালে তো বটেই, বৈদ্যুতিক স্পার্কের কারণেও আগুন ধরে যেতে পারে। নিরাপদ থাকতে তাই ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক, যাতে গ্যাস জমতেই না পারে।
আপনার বাড়ির অন্দরে গ্যাসের লিকেজ হয়েছে কি না বা অন্য কোনো কারণে গ্যাস জমেছে কি না, সে বিষয়ে আপনি কেবল দৃষ্টি আর ঘ্রাণশক্তি দিয়েই নিশ্চিত হতে পারবেন না। এ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন প্রকৌশলী মো. হাসমতুজ্জামান—
রান্নাঘর
রান্নাঘরে কাজ শুরুর আগেই বাসার সব জানালা খুলে দিন। বারান্দার দরজাগুলোও খোলা প্রয়োজন। এগজস্ট ফ্যানের ব্যবস্থা থাকলে সেটিও চালু করে নিন। এরপর চুলা ধরান। তাড়াহুড়া থাকলেও এসব কাজ করতে ভুল করা যাবে না। গৃহসহায়তাকর্মীকেও সেভাবেই নির্দেশনা দিন। প্রতিবছর অন্তত একবার পেশাদার ব্যক্তির সহায়তায় বাড়ির গ্যাসের সংযোগ পরীক্ষা করিয়ে নিন।
বাথরুম
বদ্ধ বাথরুমে ধূমপান করেন কেউ কেউ। এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ একটা অভ্যাস। মুখে ধরা সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে মুহূর্তেই পুড়ে যেতে পারে শ্বাসনালি এবং শরীরের অন্যান্য অংশ। আবার বাথরুমের দুর্গন্ধ দূর করতে মোম জ্বালান কেউ কেউ। কিন্তু বদ্ধ বাথরুমে মোম জ্বালানোও অনুচিত।
অন্দরে আরও যা করা যাবে না
বদ্ধ ঘরে ধূমপান করা যাবে না; মোম জ্বালানো যাবে না।
মশা বা পোকামাকড় তাড়াতে রাসায়নিক স্প্রে করা হলে কিছু সময়ের জন্য ঘর বদ্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব স্প্রে কিন্তু দাহ্য পদার্থ। তাই এ ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন। ঘরে দেশলাই বা লাইটার জ্বালাবেন না এ সময়।
নিরাপত্তা ও ঠান্ডার কারণে রাতে ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখলেও খানিকটা বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। সকালে জানালা এবং বারান্দার দরজাগুলো খুলে দিন।
পেশাদার ব্যক্তির সহায়তায় বাড়ির সব বৈদ্যুতিক সংযোগ প্রতিবছর অন্তত একবার পরীক্ষা করিয়ে নিন। ত্রুটি থাকলে অবিলম্বে সারিয়ে নিন কিংবা বদলে ফেলুন। ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করবেন না।