সুস্থ থাকতে অফিসে চটজলদি এই আসনগুলো করতে পারেন
দীর্ঘ সময় এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে টানা কাজ করতে করতে শরীরের অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশি শক্ত বা অনমনীয় হয়ে যায়। আর এই অবস্থা থেকে প্রথমে দেখা দেয় কোমরের সমস্যা, পরে আরও বড় জটিলতা। শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। বসে থাকতে থাকতে পেট বেড়ে যায়। সঙ্গে আসে মানসিক অবসাদ। এসব অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে ব্যায়াম। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাকরি করে ব্যায়াম করার মতো সময় বা মানসিকতা সবার থাকে না। কিন্তু আপনি যদি অফিসেই প্রতি ঘণ্টায় নিয়ম করে মাত্র তিন থেকে পাঁচ মিনিট শরীরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অস্থিসন্ধি সঞ্চারণ করে নেন, তাহলে শরীর ও মনের অনেক জটিলতা থেকেই নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। নিচে কয়েকটি যোগাসন কিছুটা বদলে কীভাবে অফিসে বসে করতে পারবেন, সেটাই জেনে নিন এখানে।
তাড়াসন
যেভাবে করবেন: চেয়ারে একটু সামনের দিকে এগিয়ে সোজা হয়ে বসুন। দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা করে পায়ের পাতা সোজা রাখুন। গোড়ালি থেকে হাঁটু সোজা থাকবে। এবার হাতের আঙুলগুলো পরস্পর ইন্টারলক করে, শ্বাস নিতে নিতে একদম মাথার ওপর বরাবর টান টান করে রাখুন।
আসনে থাকা অবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত নামিয়ে ফেলুন। এভাবে দুই থেকে তিনবার করুন।
পাদহস্তাসন
যেভাবে করবেন: দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা করে (পেট একটু ভরা থাকলে) বা দুই হাঁটু একসঙ্গে করে (পেট ফাঁকা থাকলে) সোজা হয়ে বসুন। শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত মাথার ওপরে তুলুন। এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে একদম সামনে ঝুঁকে পায়ের ওপর উপুড় হয়ে পড়ুন। পায়ের পাশ থেকে হাতটা ঝুলিয়ে রাখুন। আসনে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। এভাবে দুই থেকে তিনবার করুন।
হস্ত উত্থানাসন
যেভাবে করবেন: চেয়ার সামনে এগিয়ে বসে মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। দুটো হাত টান টান করে পরস্পরের সমান্তরালে রেখে শ্বাস নিতে নিতে ওপরে তুলুন। আপনার বাইসেপস পেশি কান স্পর্শ করে থাকবে। এবার কোমরের নিচের অংশ থেকে শরীরকে যতটা পারেন পেছনের দিকে বাঁকান। আসনে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড করুন। আসন থেকে ফেরার সময় শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত নামিয়ে মেরুদণ্ড স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসুন। দুই থেকে তিনবার করুন।
অর্ধকটি চক্রাসন
যেভাবে করবেন: দুই পা ফাঁকা করে সোজা হয়ে বসুন। দুটো হাত পাশের দিকে ঝুলিয়ে দিন। শ্বাস নিতে নিতে ডান হাত মাথার ওপর এমনভাবে টান টান করে তুলুন, যেন বাইসেপস পেশি কান স্পর্শ করে। এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাঁ দিকে শরীরের সাইড লাইন বরাবর ঝুঁকুন। কোমর থেকে বাঁকাবেন, গলা যেন ভাঁজ না হয়। বাঁ হাত নিচের দিকে ঝুলিয়ে রাখুন। আসনে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড থাকুন। ফেরার সময় শ্বাস নিয়ে ডান হাত আগের মতো সোজা করুন এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে হাত নামিয়ে স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসুন। একইভাবে বাঁ পাশেও করুন। ডান-বাঁ মিলিয়ে এক সেট। এভাবে দুই সেট করুন।
মনে রাখবেন, প্রতিটি আসনে কষ্ট হলেও শ্বাস-প্রশ্বাস যত স্বাভাবিক ও সরল রাখবেন, তত আপনার জন্য উপকারী। দম ধরে রাখা যাবে না। নিতে হবে এবং ছাড়তে হবে নিয়ম করে। যে যেমন অবস্থাতেই থাকি না কেন, রাগ-দুঃখ-আনন্দ—সব অবস্থাতেই ঠিকমতো নিশ্বাস নিতে হবে। কথায় আছে, যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।
আর কাল করব ভেবে রেখে দিলে চলবে না। শুরু করুন আজই।