ফোনের লক দেখে কি আপনার ব্যক্তিত্ব বোঝা যাবে?
আমাদের প্রত্যেকের মুঠোফোন যেন ব্যক্তিগত তথ্যের আধার। অতিগোপনীয় তথ্যের ভান্ডার বললেও বাড়াবাড়ি হবে না। আর এসব তথ্য সুরক্ষিত রাখতে পাসওয়ার্ডের বিকল্প নেই। অধিকাংশ স্মার্টফোনে সাধারণত তিন ধরনের লক সিস্টেম থাকে—প্যাটার্ন, পিন ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট। এখন অবশ্য ফেসলকও থাকে অনেক স্মার্টফোনে। যাহোক, ফোনে কে কোন ধরনের লক ব্যবহার করেন, তা দেখে ব্যক্তিত্ব বোঝা যায় বলে একটা তথ্য চোখে পড়ল একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। ঘেঁটেঘুঁটে বোঝা গেল, এই তথ্যের পেছনে তেমন শক্ত গবেষণা নেই। তবে ফোনের লকের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিত্বের মিল অনেকেই খুঁজে পান বলে দাবি করেছেন। অতএব এই লেখাকে সিরিয়াসলি না নিয়ে স্রেফ মজা হিসেবে নিন। আর মিলিয়ে দেখুন ফোনের লকের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিত্বের ধরনে আদতেই কোনো মিল আছে কি না। এ আলোচনায় অবশ্য সংগত কারণে ফেসলকের প্রসঙ্গ আসেনি।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্ব
স্মার্টফোনে যাঁরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক ব্যবহার করেন, তাঁরা স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী। নতুন অভিজ্ঞতার জন্য তাঁরা মুখিয়ে থাকেন। নতুন পরিবেশ, অবস্থান এবং যেকোনো নতুন কিছুতে সহজে মানিয়ে নিতে পারেন। জীবনে চলার পথে কোনো সুযোগ কিংবা চ্যালেঞ্জ এলে তা লুফে নেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি তাঁরা মোকাবিলা করেন খোলা মনে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। অন্যকে প্রভাবিত কিংবা অনুপ্রাণিত করতেও পটু তাঁরা। সহানুভূতিশীল ও সংবেদনশীল হিসেবেও তাঁদের সুনাম আছে।
পিন লক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্ব
মুঠোফোনে আগে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ছিল না। পিন ও প্যাটার্ন লকই ছিল ভরসা। যাঁরা এখনো ফোনে পিন লক ব্যবহার করেন, তাঁরা নিজেদের কাজ করেন অত্যন্ত সংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে। কাজ ছোট হোক কিংবা বড়—তাঁদের কাছে সমান গুরুত্ব পায়। কাজ করেন যথাযথ নিয়ম ও রুটিন মেনে। নতুন কিছু করার চেয়ে নিজের নির্দিষ্ট কাজটা সবচেয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা থাকে তাঁদের। নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে সেরাটা বের করে আনতে চান। বিশ্লেষণাত্মক ও যৌক্তিক চিন্তাবিদ হন তাঁরা। এ ধরনের মানুষ সুডোকু কিংবা ধাঁধাজাতীয় খেলা পছন্দ করেন। বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যা সমাধান করে তাঁরা আনন্দ পান।
প্যাটার্ন লক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্ব
ফিঙ্গারপ্রিন্ট আসার আগে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হতো প্যাটার্ন লক। এখনো যাঁদের স্মার্টফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিংবা ফেসলক নেই, তাঁদের বেশির ভাগই প্যাটার্ন লক ব্যবহার করেন। এই লক ব্যবহারকারীরা আত্মবিশ্বাসী হন। কাজে নতুনত্ব খুঁজে পেতে মরিয়া থাকেন। বেশির ভাগ শিল্পী, ডিজাইনার, লেখক কিংবা সৃজনশীল ব্যক্তি এই কাতারে পড়েন। নিজেদের সৃজনশীলতা ব্যবহার করে নতুন ধারা এবং ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করতে পারেন তাঁরা। এ ধরনের মানুষের মধ্যে ভালো উদ্যোক্তা হওয়ার গুণও থাকে। এই লক ব্যবহারকারীরা ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন এবং সব সময় নতুনত্ব খোঁজেন। সব সময় নতুন গ্যাজেট এবং প্রযুক্তি তাঁদের খুব টানে।
শেষ কথা
মুঠোফোনের লক দেখে মানুষের ব্যক্তিত্ব বোঝার এই ব্যাপারটা বেশির ভাগের বেলায় হয়তো মিলে যাবে। কারও কারও বেলায় না–ও মিলতে পারে। স্বভাবতই এত সব চিন্তা করে তো আমরা ফোনে লক ব্যবহার করি না। যেটা বেশি সহজ এবং নিরাপদ, সেটাই ব্যবহার করি কিংবা অনেকে বাই ডিফল্ট (মুঠোফোনে যেটা আগে থেকেই দেওয়া থাকে) প্যাটার্নই বেছে নিই। এখন ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক–সুবিধা থাকায় অনেকেই এটি ব্যবহার করছি। একইভাবে ফেসলকও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কারণ, এই দুই পদ্ধতিতে ফোনের লক খুলতে সবচেয়ে কম সময় লাগে। তবে ভিন্ন ঘরানার মানুষও আছে। ফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিংবা ফেস লক থাকার পরও তাঁরা নিজেদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য প্যাটার্ন কিংবা পিন ব্যবহার করেন। কারণ, এই দুই পদ্ধতিতে আপনাকে বোকা বানিয়ে বা ঘুমিয়ে থাকলে লক খোলার কোনো আশঙ্কা থাকে না। নিজের ফোন কতটা সুরক্ষিত রাখতে চান, তার ওপর নির্ভর করেই আপনার ফোনের লক বাছাই করা উচিত।
সূত্র: মিডিয়াম ডটকম