বিদ্যা বালান যে নিয়মে ওজন কমালেন, সেটা কি স্বাস্থ্যকর?
জিমে না গিয়ে কেবল এক বিশেষ ধরনের খাদ্যাভ্যাস মেনেই ওজন কমিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালান। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট অর্থাৎ প্রদাহ কমাতে সক্ষম, এমন খাদ্যাভ্যাসের চর্চা করাতেই ফল মিলেছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। আদতেই কি এই খাদ্যাভ্যাস ওজন কমাতে কার্যকর? তা ছাড়া শরীরচর্চা না করে শুধু খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ওজন কমানোর চেষ্টা করা কি ঠিক?
নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে দেহে প্রদাহ বাড়তে পারে। দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের কারণে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, স্মৃতিভ্রমের মতো সমস্যার পাশাপাশি ওজন বাড়ার ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়। সেই ধরনের খাবারগুলো এড়িয়ে যদি আপনি এমন খাবার বেছে নেন, যেগুলোতে প্রদাহ কমে, তাহলে তা আপনার ওজন কমাতে অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আর দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও কমবে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট এভাবেই নির্বাচন করা হয় অর্থাৎ এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসের চর্চায় আপনার প্রদাহ কমবে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে যেসব খাবার বাছাই করা হয়, সেগুলোতে ক্যালরির মাত্রাও থাকে কম। সব মিলিয়ে ওজন কমার দারুণ সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় এই খাদ্যাভ্যাসে। এমনটাই জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
কী থাকে এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসে
স্বাস্থ্যকর, উদ্ভিজ্জ খাবারকে প্রাধান্য দেওয়া হয় অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েটে। নানা ধরনের বাদাম এবং বীজ থেকে আমিষ গ্রহণ করা হয়। যাঁরা প্রাণিজ খাবার খান, তাঁরা চাইলে মুরগির মাংস এবং মাছ যোগ করতে পারেন। মাছের তেলও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। মৌসুমি ফলমূল ও শাকসবজির দারুণ সমন্বয় থাকে এই ডায়েটে। হোল গ্রেন অর্থাৎ গোটা শস্য থেকে তৈরি খাবারও এই ডায়েটের অন্তর্ভুক্ত।
কোন ধরনের খাবার বাদ দিতে হয়
চর্বি, মাখন, লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস বাদ দিতে হয় খাদ্যতালিকা থেকে। ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া খাবার কিংবা অতিরিক্ত তেল দেওয়া খাবার খাওয়াও চলবে না। প্রক্রিয়াজাত শস্য থেকে তৈরি খাবার এবং চিনিমিশ্রিত খাবার আর পানীয়ও বর্জনীয়। অর্থাৎ উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবারগুলো আপনাকে বাদ দিতে হবে। আর সত্যিকার অর্থে এই খাবারগুলোর কারণেই আমাদের দেহে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ে। বাড়ে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগের ঝুঁকি।
শরীরচর্চা ছাড়াই কি এটি কার্যকর
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট মেনে চললে আপনার ক্যালরি গ্রহণ কম হবে। ফলে ওজন কমার দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে শরীরচর্চাকে একেবারে বাদ দিয়ে দেওয়ার সুযোগ কিন্তু নেই।
শরীরটাকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ক্যালরি তো আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে। ব্যক্তিভেদে এই ক্যালরির পরিমাণ অবশ্য ভিন্ন হয়। তবে সেই ক্যালরির চাইতে বেশি ক্যালরি যাতে আপনি সারা দিনে পোড়াতে পারেন, সেটিই হওয়া উচিত ওজন কমানোর জন্য আদর্শ লক্ষ্য। অর্থাৎ শরীরটাকে আপনার সচল রাখতেই হবে। নিয়মিত শরীরচর্চায় ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ কিংবা স্ট্রোকের মতো রোগের ঝুঁকিও কমে। পেশি হয় সুগঠিত ও মজবুত। মজবুত হাড় এবং হরমোনের ভারসাম্যের জন্যও চাই ব্যায়াম। তা ছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং সামাজিক পরিসরে গুণগত সময় কাটানোও প্রয়োজন।