জাজিম নাকি ফোম, কোনটি ভালো
সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম যেমন চাই, তেমনি ভালো ঘুমের জন্য চাই ঠিকঠাক অনুষঙ্গ। স্বাস্থ্যকর ঘুমের জন্য বিছানা-বালিশ এমন হতে হবে, যাতে আপনি আরাম পান।
সাধারণভাবে মনে হতে পারে, আরামের জন্য তো নরম বিছানাই ভালো। আরামদায়ক ফোমের বিছানা পছন্দও করেন কেউ কেউ। অনেকে আবার মেঝেতে ফোমজাতীয় ম্যাট্রেস বিছিয়েও ঘুমান।
আদতেই কি ফোমের বিছানা ভালো? না কি জাজিম-তোশক ব্যবহার করা উচিত?
ঘুমানোর জন্য এমন বিছানা বেছে নিতে হবে, যা পুরোপুরি সমান। অর্থাৎ, ঘুমানোর জন্য সমতল বিছানা প্রয়োজন। তবে সুস্থতার জন্য আপনার বিছানাটি নরম নয়, হতে হবে শক্ত। তাই বলে আবার মেঝে কিংবা কাঠের মতো শক্ত না।
বরং এ ধরনের শক্ত একটা তলের ওপর দুই ইঞ্চির মতো পুরু একটা তোশক বিছিয়ে ঘুমানো যেতে পারে। একজন সুস্থ মানুষের জন্য এই ধরনের বিছানাই সবচেয়ে ভালো।
যেমন বিছানা চাই
বিছানা এমন হতে হবে, যাতে দেহের চাপে দেবে বা বসে না যায়। বেশি পুরু বিছানা সহজেই দেবে যায়। তাই পুরুত্বের বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। নরম বিছানায় সাময়িক আরাম বোধ করলেও এই বিছানা আপনার দেহের চাপে খুব সহজে দেবে যায়। এ ধরনের বিছানা ব্যবহারের কারণে আপনি কোমরব্যথায় ভুগতে পারেন। তাই ফোমের চাইতে তুলার তোশকের বিছানাই ভালো।
তবে খাটের ভেতরের ফাঁকা ফাঁকা অংশের কারণে সরাসরি তোশক রাখতে চাইলেও তা সোজা ও সমানভাবে রাখা সম্ভব হয় না, বরং তোশকটি সেই ফাঁকা অংশে ঢুকে যায়। তাই খাটে তোশকের আগে শক্ত জাজিম বিছিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ফোমজাতীয় যেকোনো উপকরণের তৈরি ম্যাট্রেসের চাইতেই জাজিম বেশি ভালো। অর্থাৎ, ফোমজাতীয় যেকোনো বিছানার ব্যবহার এড়িয়ে চলাই উচিত।
এ জাতীয় উপকরণের বিছানা প্রথমে শক্ত থাকলেও সহজেই দেবে যায়, উঁচু-নিচু হয়ে যায়। দেহের বিভিন্ন অংশের স্বাভাবিক গঠনগত ভিন্নতার কারণে এমনটা হয়। ডিভানের ফোমে শোয়ার কারণেও কোমরব্যথা হতে পারে। বাতাসের বিছানায় ঘুমালেও হতে পারে একই ধরনের সমস্যা।
প্রয়োজনে বদলে ফেলুন
তোশক বা জাজিম ব্যবহার করতে করতেও ধীরে ধীরে অসমান হয়ে পড়তে পারে। দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর তোশক, এমনকি জাজিমেরও কোনো অংশে গর্ত হতে পারে, আবার কোনো অংশ উঁচু হয়ে থাকতে পারে। এমন অবস্থায় ওই জাজিম কিংবা তোশক ব্যবহারেও কিন্তু আপনার কোমরব্যথা হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে উঁচু-নিচু হয়ে পড়া, অসমান জাজিম কিংবা তোশক আপনি সারাই করতে দিতে পারেন কারিগরের কাছে। তবে তিনি তা পুরোপুরিভাবে সমান করতে না পারলে অবশ্যই বদলে ফেলতে হবে।
বিশেষ ক্ষেত্রে
যাঁরা ঘাড়ব্যথা কিংবা কোমরব্যথার সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য চিকিৎসকেরা কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ঘাড়ব্যথা রোগীর জন্য বিশেষ বালিশ, কোমরব্যথার রোগীর জন্য শোয়ার সময়কার দেহভঙ্গির পরিবর্তনসহ এ ধরনের পরামর্শ নিতে হবে বিশেষজ্ঞের কাছ থেকেই। অন্যান্য কিছু রোগের জন্যও বিশেষ ধরনের বিছানার প্রয়োজন হতে পারে, যা চিকিৎসক আপনাকে বলে দেবেন।