ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

সারা দিন অফিস বা অন্যান্য কাজ করে কাপড় ধোয়াটা বাড়তি একটা চাপ। এই সমস্যার সমাধানে অনেকেই ওয়াশিং মেশিনের দিকে ঝুঁকছেন। বাজারে নানা ধরনের ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়, যা সহজেই কাপড় পরিষ্কার করতে পারে ও সময় বাঁচায়।

ব্যস্ত জীবনের অনুষঙ্গ ওয়াশিং মেশিন

প্রয়োজন বুঝে ওয়াশিং মেশিন কেনাটা গুরুত্বপূর্ণ
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

এখনকার ওয়াশিং মেশিনে অল-ইন-ওয়ান সুবিধা, অর্থাৎ ওয়াশিং (ধোয়া), রিন্সিং (চিপা) এবং ড্রাইং (শুকানো) একসঙ্গে করা যায়। ইলেক্ট্রো মার্ট লিমিটেডের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার জুলহক হোসাইন জানান, আধুনিক ওয়াশিং মেশিনে এআই প্রযুক্তি থাকায় কাপড়ের ধরন ও ময়লার মাত্রা বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধোয়ার সেটিংস ঠিক করা যায়।

এ ছাড়া এয়ার ওয়াশ প্রযুক্তি পানি ছাড়া শুধু গরম বাতাস ব্যবহার করে কাপড়ের জীবাণু ও গন্ধ দূর করে। স্যুট, ব্লেজার ও উলের পোশাকের জন্য এটি দারুণ কার্যকর। স্টিম ওয়াশ প্রযুক্তিতে কাপড়ের বিশেষ অংশ পরিষ্কার করা যায়। শিশুদের পোশাক, সংবেদনশীল ত্বকের উপযোগী কাপড়ের জন্য এটি আদর্শ। স্টিম ওয়াশ কাপড়ের ভাঁজ দূর করে, ফলে আয়রন লাগে কম। এটি শক্ত ময়লা ও দাগ দূর করতে সাহায্য করে, সাধারণ ধোয়ার চেয়ে কম পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে।

আরও পড়ুন

মেশিনে বুঝে কাপড়

আপনার প্রয়োজন বুঝে ওয়াশিং মেশিন কেনাটা গুরুত্বপূর্ণ। ৬ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনে ২০-২৫টি হালকা কাপড় বা ২-৩ সেট পোশাক ধোয়া যায়, ৭ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনে ২৫-৩০টি কাপড় বা ৩-৪ সেট পোশাক, ৮ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনে ৩০-৪০টি কাপড় বা ৪-৫ সেট পোশাক ধোয়া যায় আর ৯-১০ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং মেশিনে বড় পরিবারের উপযোগী ৫০-৬০টি কাপড় ধোয়া যায়। ওয়াশিং মেশিনে অতিরিক্ত কাপড় একসঙ্গে দিলে মেশিনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। তখন কাপড় ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। বেশি কাপড় দিলে পানি ও ডিটারজেন্ট কাপড়ে ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারে না, ফলে ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কারও হয় না।

আরও পড়ুন

ধরন অনুযায়ী আলাদা করে পরিষ্কার করুন

পোশাক অনুযায়ী ডিটারজেন্ট বেছে নিন
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারে কিছু নিয়ম আছে। এগুলো মেনে চললে কাপড় ভালো থাকে, মেশিন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং বিদ্যুৎ ও পানি সাশ্রয় করা যায়। বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের জন্য আলাদা ওয়াশিং মোড এবং যত্ন প্রয়োজন। তাই ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার আগে অবশ্যই ধরন অনুযায়ী কাপড় আলাদা করা উচিত। সুতির কাপড় সাধারণত গরম বা কুসুম গরম পানিতে ধোয়া ভালো। তুলার কাপড় বেশি পানি শোষণ করে, তাই স্পিন মোড ভালোভাবে সেট করা উচিত। উলের কাপড় হলে ঠান্ডা পানিতে ধোয়া ভালো, কারণ, গরম পানিতে কাপড় সংকুচিত হতে পারে। মেশিনে ‘উল ওয়াশ’ বা ‘ডেলিকেট ওয়াশ’ মোড ব্যবহার করতে হবে। সাধারণ ডিটারজেন্টের পরিবর্তে বিশেষ উলবান্ধব ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। গাঢ় রঙের কাপড় আলাদা ধোয়া উচিত। রঙিন কাপড়ের রং অন্য কাপড়ের ওপর ছোপ লাগিয়ে দিতে পারে। ঠান্ডা পানিতে ধুলে কাপড়ের রং দীর্ঘদিন ভালো থাকে। প্রথমবার কোনো নতুন কাপড় ধোয়ার আগে আলাদা করে ধোয়া ভালো। এতে বাড়তি রং উঠলে অন্য কাপড় নষ্ট হবে না। কৃত্রিম কাপড়, যেমন পলিয়েস্টার বা নাইলনের ক্ষেত্রে ঠান্ডা বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো। বেশি গতি বা শক্তিশালী স্পিন মোড এড়ানো উচিত, কারণ, এতে কাপড়ের স্থায়িত্ব কমতে পারে।

নিয়মিত পরিষ্কার করুন

ওয়াশিং মেশিনের কার্যকারিতা বজায় রাখতে ও দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে নিয়মিত এটি পরিষ্কার করা জরুরি। প্রতি মাসে একবার মেশিনের ড্রাম পরিষ্কার করতে হবে। এক কাপ ভিনেগার ও এক কাপ বেকিং সোডা দিয়ে খালি মেশিনে হট ওয়াশ চালালে জীবাণু ও দুর্গন্ধ দূর হয়। ওয়াশিং মেশিনের ফিল্টার প্রতি ২-৩ সপ্তাহ পরপর পরিষ্কার করা দরকার। নতুবা কাপড়ের সুতা বা ময়লা জমে মেশিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নিয়মিত ডিটারজেন্ট ড্রয়ার পরিষ্কার করুন। ওয়াশিং মেশিনের বাইরের অংশ নিয়মিত মুছে রাখা উচিত, যাতে ধুলা-ময়লা জমে না থাকে।

সূত্র: টাইড

আরও পড়ুন