দুপুরের খাবারের পর অফিসে ঘুম এলে কী করবেন
দুপুরে ভরপেট খেয়ে যেই না কাজ করতে ডেস্কে বসেছেন, অমনি রাজ্যের ঘুম এসে ভর করেছে চোখে। এ রকমটা কমবেশি অনেকেরই হয়। এটা কি কোনো অসুখ, নাকি অন্য কিছু? বিশেষ করে দুপুরের ব্যস্ত সময়ে কাজের ফাঁকে খুব দ্রুত আমরা কিছু খেয়ে নিই। ভাবি, এতেই পাওয়া যাবে শক্তি, আর শরীর হবে চাঙা। কিন্তু দেখা যায় উল্টোটা হয়েছে। শরীরে চলে আসে ক্লান্তি আর চোখে ঘুম। খাবার পরের এই ক্লান্তি ‘ফুড কোমা’ নামে পরিচিত। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চাইলেই এটা দূর করা বা কমিয়ে আনা সম্ভব।
অতিরিক্ত খাবারকে না বলুন
বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের কারণে ঘুম পায়। তাই যা খাবেন, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খান। যখন মনে হবে পেট ভরে গেছে, তখনই খাওয়া বন্ধ করুন। কাজ করতে করতে খেলে অনেক সময় বোঝা যায় না, কতটুকু খেলেন। তাই খাওয়ার সময় কাজ বন্ধ রাখুন। দুপুরের খাবার বেশি গ্রহণের আরেকটি কারণ সকালের নাশতা বাদ দেওয়া। তাই সকালে একটি সুষম নাশতা করুন।
বেশি তেল ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
দুপুরের খাবারে শস্যজাতীয় ও আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। বিরিয়ানি, পিৎজা, তেলেভাজা প্রভৃতি যেসব খাবারে তেল বা চর্বি বেশি থাকে, সেসব এড়িয়ে চলুন। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং কার্বোনেটেড কোমল পানীয় এ সময় গ্রহণ না করাই ভালো।
খাবারে শাকসবজি ও সালাদ রাখুন
আঁশযুক্ত সবুজ শাকসবজি আর সালাদ শরীরের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি রক্তের শর্করাকে ধীরে শোষিত হতে সাহায্য করে। এর ফলে দেহের ইনসুলিনের মাত্রা থাকে সহনশীল, যা আপনার ঘুম ঘুম ভাব দূর করবে।
বাড়ির খাবার খান
দুপুরে যখন ক্ষুধা তার অস্তিত্ব জানান দেয়, তখন আমরা খাওয়ার জন্য প্রায়ই বাইরে থেকে এটা-ওটা অর্ডার করি, যার বেশির ভাগই হয় প্রক্রিয়াজাত শর্করা আর চর্বিযুক্ত খাবার। তাই বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়াই স্বাস্থ্যকর।
ভালো ঘুমের বিকল্প নেই
রাতের একটি ভালো ঘুম পরদিন দুপুরের আলসেমি কাটাতে সাহায্য করে। ভালো ঘুমের কারণে শরীরে লেপটিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা আমাদের খাবার পরিপাকে সাহায্য করে। এ ছাড়া খাওয়ার পর এই হরমোন আমাদের মস্তিষ্কে জানান দেয় যে আমাদের পেট ভরা। ঘুম কম হলে শরীরে গ্রেলিন নামের হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়, যার ফলে ক্ষুধা ভাব বেশি হয়।
রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করান
খাওয়ার পর অলস ভাব বা ঘুম পাওয়া ডায়বেটিস বা প্রি-ডায়বেটিসের লক্ষণ হতে পারে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করান। যদি এই মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া